ইতিমধ্যেই তুঙ্গে পৌঁছেছে শোরগোল। দেশজুড়ে উঠেছে প্রতিবাদের ঝড়। এনসিইআরটি-র সিলেবাসে ইতিহাসের বাছাই করা অংশ বাদ দেওয়া নিয়ে এবার সরব হল কংগ্রেসও। তাদের অভিযোগ, নিজেদের কলঙ্কিত ইতিহাস মুছে ফেলতে চাইছে মোদী সরকার। স্রেফ প্রতিহিংসার মানসিকতা থেকে সিলেবাসে বাদ দেওয়া হচ্ছে গান্ধীহত্যা থেকে আম্বেদকরের অবদান। আসলে সম্প্রতি এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের তরফে দাবি করা হয়েছে, এনসিইআরটি-র তত্ত্বাবধানে স্কুলের পাঠ্যক্রম থেকে ইতিহাসের বাছাই করা অংশ স্রেফ বাদ দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। মুঘল যুগের ইতিহাস পাঠক্রম থেকে বাদ পড়ার পর কোপ পড়েছে আরএসএস-কে নিষিদ্ধ করার অধ্যায়েও। গান্ধীহত্যার পরে সাম্প্রদায়িক হিংসা ছড়ানোর দায়ে যে সংঘকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল, সেই তথ্যও দ্বাদশ শ্রেণির পাঠ্য বই থেকে মুছে ফেলেছে এনসিইআরটি।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ১৯৪৮ সালে মহাত্মা গান্ধীর হত্যার পর সাম্প্রদায়িক ঘৃণা ছড়ানো সংগঠনগুলিকে নিষিদ্ধ করার কথা ভাবে সরকার। ফলে এই সময়েই নিষিদ্ধ হয়ে গিয়েছিল রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ। ১৫ বছরের বেশি সময় ধরে এই সময়পর্বের কথা নথিবদ্ধ ছিল দ্বাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞানের স্কুলপাঠ্য বইগুলিতে। কিন্তু এনসিইআরটি’র বই থেকে এবার এই অংশ বাদ দেওয়া হয়েছে বলেই খবর। এমনকি দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাস বই থেকে নাথুরাম গডসে-র সম্পূর্ণ পরিচয়ও রাতারাতি উধাও হয়ে গিয়েছে। গডসে যে পুনের ব্রাহ্মণ ছিলেন, তাঁর কাজে ও কথায় মুসলিমবিদ্বেষের ছাপ পাওয়া যায়, এবং তিনি একটি গোঁড়া হিন্দুত্ববাদী সংবাদপত্র সম্পাদনা করতেন যেখানে গান্ধীজির প্রতি কড়া আক্রমণ শানানো হয়েছিল, এই সব তথ্যই বাদ পড়েছে বই থেকে, অভিযোগ উঠেছে এমনটাই। কংগ্রেস বলছে, “প্রতিহিংসা মানসিকতা থেকে ইতিহাস মুছে দিচ্ছে আরএসএস। এতেই বর্তমান শাসকের আসল মানসিকতা বোঝা যায়। ওরা শুধু গান্ধীকে আক্রমণ করছে তাই নয়, ওরা দলিতদেরও ছাড়েনি। আম্বেদকরকেও ছাড়েনি।” মোদী সরকারকে একহাত নিয়েছেন প্রাক্তন কংগ্রেস নেতা তথা রাজ্যসভার সাংসদ কপিল সিব্বল। “মোদীজি এক্কেবারে ধারাবাহিক। ইতিহাসটা ওরা ২০১৪ সাল থেকেই শুরু করতে চায়”, কটাক্ষ কপিলের।