আর বেশি দেরি নেই। বেজে গিয়েছে ভোটের দামামা। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী মে মাসেই বাংলায় অনুষ্ঠিত হতে চলেছে ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচন। তার আগে এই ৩টি স্তরের কাজের ওপর নজরদারি চালাতে নতুন একটি সফটওয়্যার আনল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। শনিবার আসানসোলের রবীন্দ্রভবনে প্রোজেক্ট মনিটরিং ইনফরমেশন সিস্টেম বা পিএমআইএস সফটওয়্যার নামের এই নয়া প্রযুক্তির উদ্বোধন করেন রাজ্যের শ্রম ও আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক। এই সফটওয়্যার প্রযুক্তি একদিকে যেমন পঞ্চায়েতের কাজে গতি আনবে, অন্যদিকে কাজের স্বচ্ছতাও বজায় থাকবে বলে জানিয়েছে প্রশাসন। রাজ্যে এটাই প্রথম এই ধরনের আধুনিক সফটওয়্যার, যা নজরদারি চালাতে পারবে ১ লক্ষ টাকার মতো ছোট কাজের ওপরেও।
প্রসঙ্গত, রাজ্যের গ্রামীণ এলাকায় পঞ্চায়েতের নানা উন্নয়নমূলক ও পরিষেবা প্রদানমূলক কাজে গতি আনতে বরাবরই তৎপর বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি সেখান থেকে দুর্নীতির সুযোগ সরিয়ে দিয়ে স্বচ্ছতা এনে প্রযুক্তির মেলবন্ধনও ঘটাতে চান তিনি। সেই লক্ষ্যেই তাঁর নির্দেশে পশ্চিম বর্ধমান জেলা প্রশাসন এই আধুনিক সফটওয়্যার তৈরি করেছে। এর মাধ্যমে জেলার সব গ্রামপঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতির পাশাপাশি জেলাপরিষদের প্রতিটি কাজের ওপর নিখুঁত নজরদারি চালানো যাবে। একমাস হল সফটওয়্যারটি পরীক্ষামূলকভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে বিভিন্ন কাজে। তাতে সাফল্য মিলছে সন্তোষজনক। পঞ্চায়েত গুলির কাজের গতি বেড়েছে। প্রতিদিন প্রতিটি কাজের কতটা অগ্রগতি হল, সন্ধ্যা হলেই সেই তথ্য সফটওয়্যারে তুলে দিতে হচ্ছে। ফলে, ফাঁকি দেওয়ার কোনও জায়গা নেই। এই সফটওয়েরে মাধ্যমে নজরদারি চালানো সহজ হবে। পঞ্চায়েতের কাজও হবে দ্রুততা ও স্বচ্ছতার সঙ্গে, এমনই মনে করছে পশ্চিম বর্ধমান জেলা প্রশাসন।
উল্লেখ্য, দেশে ই-স্বরাজ নামে একটি কেন্দ্রীয় পোর্টাল রয়েছে। সেখানে দেশের প্রতিটি রাজ্যের প্রতিটি জেলার প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদকে নিজেদের প্রকল্পের তথ্য আপলোড করতে হয়। কিন্তু সেই পোর্টালে প্রকল্পগুলির ওপর নজরদারি করার কোনও সুযোগ নেই। অনেক সময় কেন্দ্রীয় পোর্টালে প্রকল্পের তথ্য আপলোড করেই দায় সারছিলেন অনেকে। নজরদারির কোনও ব্যবস্থা না থাকায় কাজের গতি হারাচ্ছিল। এই জোড়া সমস্যা দূর করতে রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরকে বিশেষ সফটওয়্যার তৈরির নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই কাজই করে দেখিয়েছে পশ্চিম বর্ধমান জেলা প্রশাসন। তাঁরা এমন সফটওয়্যার প্রস্তুত করেছেন, যা প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েতের পাশাপাশি প্রতিটি গ্রাম সংসদের কাজের ওপর নজরদারি চালাতে পারছে। কাজের খুঁটিনাটি তথ্য সফটওয়্যারে থাকছে। কাজে অবহেলার বিষয়টি নজরে এলেই পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। নবান্ন সূত্র জানিয়েছে, আগামী দিনে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে রাজ্যের সবকটি জেলার সব গ্রাম পঞ্চায়েতেই।