কঠোর পদক্ষেপের পথে হাঁটল রাজ্য মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। এবার মহার্ঘ ভাতার দাবিতে প্রশাসনিক ধর্মঘটে শামিল শিক্ষকদের শোকজ নোটিশ পাঠানো শুরু হল। বুধবার থেকে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের দফতর থেকে শিক্ষকদের নাম করে এই শোকজ নোটিশটি পাঠানো হয়েছে। পর্ষদের তরফে এই নোটিস পাঠিয়েছেন ডেপুটি সেক্রেটারি রুমি গোস্বামী। সরকারি নির্দেশিকা থাকা সত্ত্বেও ১০ই মার্চ যে সমস্ত শিক্ষক স্কুলে হাজির হননি, তাঁদের ১০ দিনের মধ্যে কারণ জানানোর নির্দেশ দিয়েছে পর্ষদ। উল্লেখ্য, ডিএ-র দাবিতে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের লাগাতার আন্দোলন চলছে। গত ২০-২১ ফেব্রুয়ারি কর্মবিরতির ডাক দিয়েছিল রাজ্য সরকারি কর্মচারী সংগঠনগুলি। সেই কর্মসূচি শেষ হওয়ার পরেই ৯ মার্চ প্রশাসনিক ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিল তারা। কিন্তু ওইদিন মাধ্যমিক পরীক্ষা থাকায় প্রশাসনিক ধর্মঘট একদিন পিছিয়ে ১০ তারিখে করা হয়। ফেব্রুয়ারি মাসের কর্মবিরতি ও ১০ মার্চ প্রশাসনিক ধর্মঘট রুখতে কড়া নির্দেশিকা জারি করেছিল নবান্ন। সেই নির্দেশিকায় জানানো হয়েছিল, কোনও সরকারি কর্মচারী যদি ওইদিনগুলিতে কাজে যোগ না দেন, তাঁর কর্মজীবন থেকে যেমন একটি দিন বাদ দেওয়া হবে। তেমনই তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপও করা হবে।
স্বভাবতই পর্ষদের এমন কাজে খুশি নয় শিক্ষক সংগঠনগুলি। বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মচারী সমিতি নেতা স্বপন মণ্ডল বলেন, ‘‘সরকার প্রথমে জানিয়েছিল মাত্র ৫ হাজার শিক্ষক অনুপস্থিত ছিলেন। পরে দেখা গেল দেড় লক্ষ শিক্ষক এই প্রশাসনিক ধর্মঘটে শামিল হয়েছেন। শিক্ষকদের শোকজ করে আসলে সরকার আগুন নিয়ে খেলছে। এই সরকার শিক্ষা ব্যবস্থাকে এমনিতেই ধংস করে দিয়েছে। আর এই শোকজের ফল ভাল হবে না বলেই আমরা মনে করছি।’’ তবে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেছে তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি দিব্যেন্দু মুখোপাধ্যায়। ‘‘ডিএ কোনও সাংবিধানিক অধিকার নয়। দ্বিতীয়ত, আন্দোলনও করব, আবার মামলাও করব। দুটো তো একসঙ্গে সম্ভব নয়। তৃতীয়ত, এরা যদি ছাত্রছাত্রীদের স্বার্থ বজায় রেখে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন করত তা হলেও বিষয়টি বিবেচনা করে দেখা যেত। কিন্তু যাঁরা ছাত্রছাত্রীদের স্বার্থ না দেখে ধর্মঘট করেছেন, তাঁদের অভিভাবকদের দৃষ্টিকোণ থেকে সঠিক বলে মনে করতে পারছি না’’, জানিয়েছেন দিব্যেন্দু।