বাংলার মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেওয়ার পর থেকেই রাজ্যে নারীদের ক্ষমতায়ণ, স্বনির্ভরতা ও সার্বিক উন্নয়নে বিশেষভাবে জোর দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যার সুফলও মিলেছে হাতেনাতে। নারী ক্ষমতায়ণে মডেল হিসেবে সারা দেশের মধ্যে উঠে এসেছে বাংলা। তারই জ্বলন্ত উদাহরণ হল ‘সুন্দরিনী’। করোনার প্রকোপ কাটিয়ে রেকর্ড বিক্রি করেছে তারা। ‘সুন্দরিনী’ হল সুন্দরবন কো অপারেটিভ মিল্ক অ্যান্ড লাইভস্টক প্রোডিউসার্স ইউনিয়ন লিমিটেডের ব্র্যান্ড। সুন্দরবনের মহিলারা এলাকার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দুধ সংগ্রহ করে এই সমবায়ে বিক্রি করেন। এই সমবায়ের সঙ্গে যুক্ত মহিলার সংখ্যা এই মুহূর্তে প্রায় পাঁচ হাজার। ওই দুধ থেকে মিষ্টি ও নানান দুগ্ধজাত দ্রব্য উৎপাদিত হয়। সেগুলো আবার সুন্দরিনীর বিভিন্ন আউটলেটে বিক্রি হয়। জৈব পদ্ধতিতে উৎপন্ন বিভিন্ন খাদ্যপণ্যও বিক্রি হয়। গত দু-বছর করোনা ও লকডাউনের কারণে সুন্দরিনীর বিক্রি কমে গিয়েছিল। লোকসানে চলছিল সংস্থা। এরপর ঘুরে দাঁড়াতে নানান উদ্যোগ নিয়েছে তারা।
উল্লেখ্য, সুন্দরিনীর দোকানের সংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি সংশোধনাগারে দুধ বিক্রিও করা হয়েছে। এতেই এসেছে সাফল্য। পরিসংখ্যান বলছে, গত বছরের তুলনায় ৬৭ শতাংশ বিক্রি বেড়েছে। সংস্থার মাসিক আয় ১ কোটি টাকায় পৌঁছেছে। বাসন্তী, নামখানা, পাথরপ্রতিমাসহ সাতটি ব্লকের মহিলারা এই সমবায়ে দুধ বিক্রি করছেন, সুন্দরবনের মহিলাদের এই প্রকল্পে নজর কাড়া অংশগ্রহণ বাড়তি মাত্রা যোগ করেছে। আরও বেশি সংখ্যক মহিলাকে সমবায় সংস্থায় যুক্ত করার পরিকল্পনা নিচ্ছে সুন্দরিণী। আগামী এক বছরের মধ্যে আরও পাঁচ হাজার মহিলাকে এই কাজে যুক্ত করা হবে বলে জানা গিয়েছে। প্রান্তিক এলাকাকে আরও বেশি করে যুক্ত করার পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। কুলতলি, গোসাবা, মথুরাপুর ১ এবং সাগর ব্লকের মহিলাদের প্রকল্পের আওতায় আনার পরিকল্পনা গৃহীত হয়েছে, যা অত্যন্ত ইতিবাচক বলেই মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল।