বড়সড় সিদ্ধান্ত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। মোদী সরকার ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের টাকা দিচ্ছে না। তার জেরে গ্রাম বাংলায় গরীব মানুষেরা ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে কাজ পাচ্ছেন না। এতে গ্রামীণ অর্থনীতিতে যেমন ধাক্কা লাগছে তেমনি ধাক্কা লাগছে ওইসব গরীব মানুষদের জীবনযাপনেও।
এই ধাক্কা কাটিয়ে আটতেই মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ‘রাস্তাশ্রী’ প্রকল্পের মাধ্যমে গ্রাম বাংলায় যে সাড়ে ১১ হাজার কিমি রাস্তা সংস্কার ও নির্মাণের কাজ করা হবে সেখানে কাজ দেওয়া হবে ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের জবকার্ডধারীদের। শুধু তাই নয়, এই সিদ্ধান্ত যাতে তৃণমূলস্তর পর্যন্ত কার্যকর হয় তার জন্য মুখ্যমন্ত্রী সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, রাস্তা নির্মাণের ক্ষেত্রে যে ঠিকাদার সংস্থা ১০০ দিনের কাজের জবকার্ডধারীদের কাজ দেওয়ার শর্ত মেনে নেবে কেবলমাত্র তারাই কাজ পাবে।
এমনকি হুগলি জেলায় এই মর্মে নোটিসও জারি হয়ে গিয়েছে। তবে এই জবকার্ডধারীদের কেবলমাত্র অদক্ষ শ্রমিক হিসেবেই কাজে লাগানো যাবে বলে শর্ত আরোপ করা হয়েছে। ওয়াকিবহাল মহলের ধারনা, গ্রামীণ মানুষকে কাজের সুযোগ করে দিতেই ও ১০০ দিনের কাজের যোগ্য বিকল্প জবকার্ডধারীদের হাতে তুলে দিতে মুখ্যমন্ত্রী এই পদক্ষেপ করেছেন।
হুগলি জেলা পরিষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, রাস্তাশ্রী প্রকল্পের জন্য ৭ কোটি টাকার টেন্ডার করা হয়েছে। সেখানে স্পষ্ট করে বলে দেওয়া হয়েছে, যে সংস্থা বা ঠিকাদার আবেদন করবেন, তাঁকে ১০০ দিনের প্রকল্পের শ্রমিকদের কাজে নিতে হবে। নির্মাণকাজের নানা শর্তের সঙ্গে এই শর্তটিও জুড়ে দেওয়া হয়েছে।
কেন্দ্রীয় সরকারের অসহযোগিতার জন্য গ্রামীণ এলাকায় কর্মসংস্থানের সঙ্কট দেখা দিয়েছে। এই পদ্ধতিতে তার সুরাহা মিলবে। রাস্তাশ্রী ছাড়া অন্য প্রকল্পের ক্ষেত্রেও এমনই শর্ত রাখা হবে। হুগলি জেলা পরিষদের উপাধ্যক্ষ নিশেষ ঘোষ এই বিষয়ে জানিয়েছেন, ‘রাস্তাশ্রী প্রকল্পের মাধ্যমে ১০০ দিনের কাজের শ্রমিকদের বিকল্প কর্মসংস্থান দেওয়া যুগান্তকারী পদক্ষেপ। কেন্দ্রের সরকার নানাভাবে গ্রামীণ মানুষকে হেনস্তা করছে। আমরা মানুষের পাশে থাকতে চাইছি।’ হুগলি জেলার ঠিকাদারদের তরফেও জানা গিয়েছে, এই শর্তে তাঁদের কোনও অসুবিধা নেই। স্থানীয় মানুষকে অদক্ষ শ্রমিক হিসেবে নিয়োগ করা যেতেই পারে। কিছুক্ষেত্রে তা তাঁরা করেও থাকেন। এবার সেটিকে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ফলে বেশি সংখ্যক মানুষ কাজ পাবেন।