বৃহস্পতিবার থেকেই রাজ্যজুড়ে শুরু হয়েছে মাধ্যমিক পরীক্ষা। এবছরের পরীক্ষার্থীর সংখ্যা গতবারের তুলনায় অনেকটাই কম। সব মিলিয়ে রাজ্যে এবার মাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছেন প্রায় ৭ লক্ষ পরীক্ষার্থী। জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষাকে ঘিরে স্বাভাবিকভাবে পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক কৌতূহল ও উত্তেজনা থাকে। তবে আর পাঁচ জন পরীক্ষার্থীর মতো পরীক্ষাকেন্দ্রে গিয়ে পরীক্ষা দিতে পারছেন না টিটাগড়ের বাসিন্দা নন্দিনী কুমারী। কলকাতার হাসপাতাল থেকেই এবার পরীক্ষা দিচ্ছেন তিনি। কিডনির সমস্যার কারণে তার ডায়ালিসিস সম্পূর্ণ হয়েছে। বর্তমানে হাসপাতালে ভরতি রয়েছেন ওই পরীক্ষার্থী। তাই তার অভিভাবকদের আবেদনের ভিত্তিতে হাসপাতালের বেডেই তার পরীক্ষা নিতে রাজি হয়েছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ।
এপ্রসঙ্গে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “নন্দিনী যাতে হাসপাতাল থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে পারে সেজন্য তার অভিভাবকরা আবেদন জানিয়েছিলেন। এর জন্য তারা সমস্ত প্রয়োজনীয় মেডিক্যাল নথি জমা দিয়েছেন। আমরা সমস্ত কিছু খতিয়ে দেখে জানতে পেরেছি সত্যি সত্যিই হাসপাতালে ভরতি রয়েছে ওই পরীক্ষার্থী। তাই আমরা বিষয়টি বিবেচনা করে তাকে হাসপাতাল থেকে পরীক্ষা দেওয়ার অনুমতি দিয়েছি।” ওই পরীক্ষার্থীই একমাত্র হাসপাতাল থেকে মাধ্যমিক দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন পর্ষদের সভাপতি রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায়। প্রসঙ্গত নন্দিনী টিটাগড়ের বাসিন্দা। প্রায় দেড় মাস আগে কিডনিতে সমস্যা দেখা দেয়। মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হওয়ার দু সপ্তাহ আগে ৮ ফেব্রুয়ারি তার বাবা-মা তাকে ভিআইপি রোডের এক বেসরকারি হাসপাতালে ভরতি করেন। সেখানেই চলে তার ডায়ালিসিস। তিন রাউন্ড ডায়ালিসিস চলার পর বর্তমানে স্থিতিশীল রয়েছে নন্দিনী। নন্দিনীর বাবা বলেছেন, “আমার মেয়ে এক বছর নষ্ট করতে চায়নি। আমরা তার ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলেছি এবং হাসপাতালের কর্মকর্তার আমাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আমরা কৃতজ্ঞ।” মধ্যশিক্ষা পর্ষদ পরীক্ষার অনুমতি দেওয়ায় খুশি নন্দিনী। তবে সহপাঠীদের সঙ্গে পরীক্ষা কেন্দ্রে গিয়ে পরীক্ষা দিতে না পারায় খানিক মনখারাপ তাঁর। “বোর্ডের কর্মকর্তারা আমাকে হাসপাতাল থেকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণের অনুমতি দিয়েছে। আমি খুশি। আমাকে একটি শিক্ষাবর্ষ হারাতে হবে না”, জানিয়েছেন তিনি।
