আজ ২১শে ফেব্রুয়ারি। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। ৭১ বছর আগে আজকের দিনেই নিজের ভাষার জন্য রক্তক্ষয়ী সংগ্রামে অংশ নিয়েছিলেন সালাম-বরকত-রফিক-জব্বাররা। দিয়েছিলেন প্রাণবলিদান। আজ সেই শহীদদের স্মরণ করার দিন। উর্দুকে নয়, তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে (আজকের বাংলাদেশ) বাংলাকে রাষ্ট্রীয় ভাষার মর্যাদা দিতে হবে, এই দাবিতেই লড়াই করা হয়েছিল রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে। প্রতিবারের মতো, এবছরও সেজে উঠেছে ঢাকার বিখ্যাত শহীদ মিনার। যা তৈরি করা হয়েছে সেই শহীদদের স্মৃতিতে। দু’দিন আগে থেকেই দেখা যাচ্ছে সাজো সাজো রব৷ পুরনো দেওয়াল লিখন মুছে এদিন আবার দেওয়াল লিখনে ভরে যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চত্বর ও শহিদ মিনারের আশপাশের এলাকা। আল্পনা দেওয়া হয়৷ ফুল দিয়ে সাজানো হয়। শহীদ মিনারের পাদদেশে এবং আশপাশে শিল্পীরা কাজ করতে পারেন ১৯শে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। এরপর ২০ তারিখ রাত ১২টার পর মানে ২১-এর প্রথম প্রহরে সে দেশের প্রধানমন্ত্রী এবং রাষ্ট্রপতি শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করতে আসেন। তাই নিরাপত্তার জন্য পুরো বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা বিশেষ করে মিনারের চারপাশ নিরাপত্তা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে থাকে।
এরপর রাত ৩টের পর থেকেই সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয় এই শহীদ মিনার প্রান্তর। ১৯ তারিখ শহিদ মিনারের সামনের দেওয়ালে ছবি আঁকলেন শিল্পী শিশির ভট্টাচার্য। ২০ তারিখ বিকেল পর্যন্ত রাস্তায় আল্পনা দেওয়া হয়েছে। স্কুলের স্কাউট দলের ছাত্রছাত্রীরা ফুল দিয়ে সাজিয়েছেন মিনারের পাদদেশ তবে মঙ্গলবার সকাল থেকে ঢাকার রাস্তায় মানুষের ঢল নেমেছে। ছাত্রছাত্রীরা প্ল্যাকার্ড হাতে রাস্তায় প্রভাতফেরি করেছেন। মেঘলা আকাশে আবেগ ও গর্বে ভরে উঠেছে পথঘাট। সারা বাংলাদেশের মানুষ ভিড় করেন এই মিনারের পাদদেশে। মাইকে বাংলা গান বাজানো হয়। সেই গানের সঙ্গেই শোভাযাত্রায় পা মেলান হাজার হাজার মানুষ। শোক পালনের জন্য মূলত সাদা-কালো পোশাকে সেজে উঠেছেন তাঁরা।