সামনেই উপনির্বাচন সাগরদিঘিতে। আজ, রবিবার সেখানে বিশাল জনসভা করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। মঞ্চ থেকে একযোগে বিজেপি ও কংগ্রেসকে একযোগে আক্রমণ করলেন তিনি। কংগ্রেস এবং বিজেপির মধ্যে যোগসাজশের অভিযোগ আনলেন অভিষেক। শুধু মৌখিক অভিযোগই নয়, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে কংগ্রেস প্রার্থী বায়রন বিশ্বাসের এক সঙ্গে ছবি দেখিয়ে তিনি বলেন, ‘‘অনেকেই ভাবছেন উপনির্বাচনের কোনও গুরুত্ব নেই। কারণ, এই ভোটে তো আর মুখ্যমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হবে না। জেলা পরিষদও ঠিক হবে না। মুর্শিদাবাদ জেলা ২০ জন বিধায়ক দিয়ে আমাদের কৃতজ্ঞ করেছে। কিন্তু সাগরদিঘির উপনির্বাচন ২০২১ সালের ভোটের থেকেও গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এই ভোটে বিরোধীরা সব জোট বেঁধেছে। তাই তাদের জোট ভেঙে দিতেই হবে।’’ অভিষেক আরও বলেন, ‘‘পদ্মফুল মনোনীত কংগ্রেস প্রার্থী হয়েছেন। আপনারা দেখতে চান, আমার কথা সত্যিই কি না, দেখুন আপনারা। এ বার তো বিশ্বাস হবে। কারণ, আমি এক কথার ছেলে।’’
এরপর তৃণমূল প্রার্থী দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় এবং জঙ্গিপুর জেলা তৃণমূলের সভাপতি তথা সাংসদ খলিলুর রহমানকে ডেকে নেন অভিষেক। তাঁরা একটি ফ্লেক্স তুলে ধরেন উপস্থিত জনতার উদ্দেশ্যে। যেখানে দেখা যায়, কংগ্রেসের প্রার্থী বায়রনের সঙ্গে রয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু। পাশাপাশি, বিরোধী দলনেতার একটি বক্তৃতাও শোনান অভিষেক। যেখানে শুভেন্দুকে বলতে শোনা যায়, ‘‘সনাতনী বুথে আপনারা পদ্মফুল ফুটিয়ে দিন। সংখ্যালঘু বুথে যাতে তৃণমূল না জেতে সেই ব্যবস্থা আমরা করব।’’ অবশ্য সেই বক্তৃতা বিরোধী দলনেতার কি না, তা যাচাই করেনি ‘এখন খবর’।
পাশাপাশি এদিন অভিষেক জানান, ‘‘সিরাজকে হারাতে তাঁর একজন বিশ্বস্ত সৈনিক তাঁর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিলেন। তিনি হাত মিলিয়েছিলেন ইংরেজদের সঙ্গে। আর বাংলায় এখন যাঁরা মীরজাফর রয়েছেন, তাঁদের ভূমিকাও আপনারা দেখছেন। আর রয়েছেন এমন একজন, যিনি মুর্শিদাবাদ জেলার মানুষের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমি সাগরদিঘিতে সিপিএম, কংগ্রেস, বিজেপির চক্রান্ত ভাঙতে এসেছি। ১১টি অঞ্চল নিয়ে এই বিধানসভা। বিধানসভা ভোটের সময় সব অঞ্চলেই তৃণমূল জয়ী হয়েছিল। এ বার এখানে সব বুথেই তৃণমূলকে জেতাতে হবে। না হলে সেই অঞ্চলকে লোকে মীরজাফর বলবে।’’ শুভেন্দুর পাশাপাশি প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীরকেও আক্রমণ করেন অভিষেক। বলেন, ‘‘বাংলার মীরজাফর এবং জেলার মীরজাফরের নাম কী? অধীর চৌধুরীকে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা নিরাপত্তা দিচ্ছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের পুলিশ অধীর চৌধুরীকে নিরাপত্তা দিচ্ছে। অধীর চৌধুরীর দিদির পুলিশের ওপর ভরসা নেই। দাদার পুলিশের ওপর ভরসা আছে। এরাই সবচেয়ে বড় মীরজাফর।’’ এখানেই থেমে থাকেননি তিনি। ‘‘আমাকে ২০টা নোটিশ দিয়েছে ইডি। সুজন চক্রবর্তী, অধীর চৌধুরী এবং শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে সুদীপ্ত সেন লিখিত অভিযোগ করেছেন। তাও ইডি কোনও ব্যবস্থা নিল না’’, অভিযোগ তৃণমূল সাংসদের।