এবার মোদী সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে মুখর হল জাতীয় বাংলা সম্মেলন। তাদের অভিযোগে, ক্রমশ হকারদের সৎ উপায়ে রোজগারের পথ অবরুদ্ধ করছে কেন্দ্র। পাশাপাশি, কেন্দ্রের রেল বেসরকারিকরণে কাজ হারিয়েছেন বহু খেটে খাওয়া হকার। প্রতিবাদে তাদের নেতৃত্বেই বৃহস্পতিবার কলকাতার রাজপথে বিক্ষোভ দেখালেন হকাররা। প্রায় দশ হাজার মানুষ অংশ নিয়েছিলে এই বিক্ষোভ কর্মসূচীতে। হকারদের দাবি, তাদের কাজ করতে বাধা সৃষ্টি করছে আ এবং তোলাবাজি করছে। পাশাপাশি পূর্ব রেল দফতর ৪৭ টা ট্রেনে হকারি বন্ধ করে নেওয়ার পরিকল্পনা করেছে এবং বিক্রি করে দেওয়া হবে নয়ডার এক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে। ফলে তাদের রুটিরুজির ভবিষ্যৎও অনিশ্চয়তার মুখে। বঙ্গীয় হকার সম্মেলনের খড়গপুরের হকার নেতা, হিমাদ্রী বটব্যাল জানিয়েছেন, কেন্দ্র হকারদের মৌলিক অধিকার খন্ডন করছে। তাঁর কথায়, হকারি তাদের সাংবিধানিক অধিকার, কনস্টিটিউশন বেঞ্চ ১৯৮৯ সালের বিবৃতিতে জানিয়েছেন আর্টিকেল ১৯(১) জি অনুসারে হকারি তাদের মৌলিক অধিকার। এছাড়াও ২০১০ সালে দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্ট ২০১০ সালে হকারিকে জীবন জীবিকার অধিকার হিসাবে ঘোষণা করেছে। হুগলির হকার সংগঠনের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা নাদিম মল্লিকের অভিযোগ, “হকাদের ওপর মোদী সরকার যে অত্যাচার এবং হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। এমনকী তাদের দোকান ভেঙ্গে ফেলা হচ্ছে, তোলাবাজি করেছে। এটা তা আসলে সংবিধানের ওপর আঘাত।”
পাশাপাশি, এক সাক্ষাৎকারে সংগঠনের নেতৃত্ব সৈকত পাল জানিয়েছেন, রেল বেসরকারিকরণের গেঁড়োয় নিত্য যাত্রীদের নানা সমস্যায় ফেলতে চাইছে কেন্দ্র। তাঁর কথায়, “বেসরকারিকরণ করা হচ্ছে এটা কাদের সুবিধার কথা চিন্তা করে করছে? এটার ফলে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে কাদের লাভ হচ্ছে? সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের পেটে যেমন লাথি মারা হচ্ছে তেমনিভাবে যারা নিত্যদিনের যাত্রী তাদেরও সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে আগামী দিনে। কারণ ট্রেন বেসরকারি হলে ৫০ টাকা দিয়ে চা কিংবা কফি নিত্যদিনের যাত্রী কিনতে পারবেন না।”
দেখে নেওয়া যাক, জাতীয় বাংলা সম্মেলনের মূল দাবিগুলি :
১) রেল হকারদের আইনি স্বীকৃতি দেওয়া।
২) বিনা কারণে রেল হকারদের তুলে দেওয়া কিংবা দোকান ভেঙ্গে দেওয়া চলবে না, যদি তা করা হয় তার উপযুক্ত কারণ এবং পুনর্বাসন জায়গায় এবং ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
৩) ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে রেল ক্ষেত্রে যে ইউনিয়ন বাজেট সরকার ঘোষণা করেছে অমৃত ভারত স্টেশন স্ক্রীম সেইখানে রেল হকারদের জন্য জায়গা থাকা ব্যবস্থা করতে হবে, পাশাপাশি রেল কর্তৃপক্ষ যে টেন্ডার ঘোষণা করেন সেইখানে বাংলায় অবস্থিত কোম্পানিকে প্রাধান্য দিতে হবে।
৪) রেলের জমিতে যেসব পরিবার দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করে আসছে তাদের পুনর্বাসন ব্যবস্থা করতে হবে। এছাড়াও সংগঠনের সম্পাদক সিদ্ধব্রত দাসের মতে , এই চার দফা দাবিগুলো না মানলে আগামী দিনে বাংলা জুড়ে কেন্দ্র সরকারের নীতির বিরুদ্ধে জোরদার আন্দোলন করা হবে। তাঁর কথায়, ভারতীয় রেল দেশের সম্পদ। যার মধ্যে খেটে খাওয়া ভারতীয়দের পরিশ্রম জড়িয়ে আছে। সেটা বিক্রি করে দেওয়া কোনওদিনই মেনে নেবে না জাতীয় বাংলা সম্মেলন।