৩৩ বছর পর ফের ঘরে আসতে চলেছে রঞ্জি ট্রফির খেতাব? আপাতত সেই আশাতেই বুক বাঁধছে বাংলায়। রবিবার গতবারের চ্যাম্পিয়ন মধ্যপ্রদেশকে হারিয়ে রঞ্জি ট্রফির ফাইনালে পৌঁছে গেলেন মনোজরা। অন্য সেমিফাইনালে কর্ণাটককে হারিয়েছে সৌরাষ্ট্র। ইডেন গার্ডেন্স, অর্থাৎ ঘরের মাঠেই ফাইনাল খেলতে নামবে নামবে বাংলা। ১৯৮৯-৯০ মরসুমের পর ফের ঘরের মাঠে রঞ্জি জয়ের সুযোগ মনোজদের সামনে। এই নিয়ে পর পর তিন বার রঞ্জির সেমিফাইনাল খেলল বাংলা। এর আগে ২০১৯-২০ মরসুমে ফাইনালে উঠেছিল তারা। সেবারও প্রতিপক্ষ ছিল সৌরাষ্ট্র। কিন্তু বার হেরে যায় বাংলা। উল্লেখ্য, কোয়ার্টার ফাইনালের পর রঞ্জি সেমিফাইনালেও ম্যাচের সেরা হলেন আকাশ দীপ। দু’টি ম্যাচেই ছ’উইকেট নিয়েছেন বাংলার পেসার। মধ্যপ্রদেশের বিরুদ্ধে প্রথম ইনিংসে শতরান করেন অনুষ্টুপ মজুমদার এবং সুদীপ ঘরামি। দ্বিতীয় ইনিংসে ৮০ রান করেন অনুষ্টুপ। ভুল আউটের শিকার হয়ে মাঠ ছাড়তে তাঁকে দ্বিতীয় ইনিংসে। আকাশ প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেট নেন। তাঁর দাপটে মধ্যপ্রদেশ শেষ হয়ে যায় ১৭০ রানে। ২৬৮ রানে লিড পেয়ে যায় বাংলা। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করে ৫৪৮ রানের বিরাট লক্ষ্য রাখে তারা মধ্যপ্রদেশের সামনে।
প্রসঙ্গত, এ বারের রঞ্জি মরসুমে প্রথম ম্যাচ থেকেই ছন্দে রয়েছে বাংলা। ধারাবাহিক ভাবে রান করেছেন ব্যাটাররা, উইকেট নিয়েছেন বোলাররা। তরুণ সুদীপ ঘরামি, অভিষেক পোড়েল, প্রদীপ্ত প্রামাণিকদের সঙ্গে অভিজ্ঞ মনোজ তিওয়ারি, অনুষ্টুপ মজুমদার, অভিমন্যু ঈশ্বরণদের মিশেল বাংলার জয়ে বড় ভূমিকা নিয়েছে। ওপেনিং জুটি নিয়ে সমস্যা রয়েছে বাংলার। বার বার সেই জুটি বদলাতে হয়েছে, কিন্তু ওপেনারের ব্যর্থতা কখনও ঢেকে দিয়েছেন সুদীপ, কখনও অনুষ্টুপ, কখনও মনোজ। বোলারদের মধ্যে ধারাবাহিক ভাবে উইকেট নিয়েছেন আকাশ। মাঝে মুকেশ কুমার এবং শাহবাজ আহমেদ ভারতীয় দলের সঙ্গে থাকায় খেলতে পারেননি। তাতেও বাংলার শক্তি কমেনি। যে ক্রিকেটারকে সুযোগ দেওয়া হয়েছে, তিনিই রান করেছেন, উইকেট নিয়েছেন। আকাশ ঘটক নজর কেড়ে নিয়েছিলেন বেশ কিছু ম্যাচে। আগামী ১৬ই ফেব্রুয়ারি থেকে রঞ্জি ফাইনাল। সেই ম্যাচ খেলার আগে উচ্ছ্বাসে ভেসে যেতে নারাজ বাংলা শিবির। মনোজ জানিয়েছিলেন, এটাই তাঁর শেষ রঞ্জি। সেই প্রতিযোগিতা জিতেই কেরিয়ারে ইতি টানতে চেয়েছিলেন তিনি। সেই সুযোগ চলে এসেছে বাংলার অধিনায়কের কাছে। এবার ফাইনালে সৌরাষ্ট্রকে টেক্কা দিয়ে বাংলা খেতাব জিততে পারে কিনা, সেদিকেই তাকিয়ে ক্রিকেটমহল।