আগামী ১০ই মার্চ, শুক্রবার পুর-বাজেট পেশ করবেন কলকাতার মহানাগরিক ফিরহাদ হাকিম। এবার ঘাটতি শূন্য পুর-বাজেটই মূল লক্ষ্য তাঁর। নতুন কর না চাপিয়ে কী ভাবে আয় বাড়ানো যায় সেই পথ খুঁজছেন, কলকাতা পুরসভার আধিকারিকেরা। করোনার খরা কাটিয়ে কলকাতা পুরসভা আয় বৃদ্ধি করেছে। একইসঙ্গে তাল মিলিয়ে বেড়েছে পেনশন ও অন্যান্য ভাতা-সহ বিভিন্ন হিউম্যান রিসোর্স খাতে খরচ। গত কয়েক বছরের তুলনায় চলতি অর্থবর্ষে (২০২২-২৩) রেকর্ড আয় হলেও বিভিন্ন খাতে খরচের বহরও বেড়েছে। দেনার বোঝাও বইতে হচ্ছে। এই অবস্থায় আগামী আর্থিক বছরের (২০২৩-২৪) বাজেটে ঘাটতি কমাতে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অপ্রয়োজনীয় খরচ কমানোর পথে হাঁটতে চলেছে পুরসভা। একইসঙ্গে আয় বাড়াতে পুরসভার বিভিন্ন পরিষেবার বিনিময় মূল্যের পরিবর্তন আনা হবে বলে ঠিক হয়েছে। কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর, ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাজেট ঘাটতি ছিল ১৭৭ কোটি টাকা। লক্ষ্য, আগামী দিনে ঘাটতি শূন্য বাজেট। তবে ২০২৩-২৪ আর্থিক বছরে সেই ঘাটতি ১০০ কোটি টাকায় নামিয়ে আনার চেষ্টা চলছে। যদিও সেই লক্ষ্যমাত্রা কতটা পূরণ করা যাবে, তা নিয়ে চিন্তিত পুর অর্থবিভাগ।
প্রসঙ্গত, বর্তমানে আধিকারিকরা এখন বাজেট প্রস্তুতিতে ব্যস্ত। গত বছরের তুলনায় চলতি আর্থিক বছর কয়েকশো কোটি টাকা আয় বেড়েছে পুরসভার। সম্পত্তি কর এবং রাজস্ব আদায় বিভাগ, বিল্ডিং, লাইসেন্স, মার্কেট, বিনোদন-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্র থেকে ইতিমধ্যে পুরসভার ১৫০০ কোটি টাকার বেশি আয় হয়েছে। আর্থিক বছর শেষ হতে এখনও বাকি মাসখানেক। পুরসভার আয়ের পরিমাণ আরও বাড়বে বলে আশায় পুর-কর্তারা। কলকাতা পুরসভার তথ্য বলছে, ২০২১ সালের মার্চ পর্যন্ত পাওনাদার ও ঠিকাদারদের বকেয়া অধিকাংশই মেটানো সম্ভব হয়েছে। তবু ও হাজার কোটি টাকার দেনা রয়েছে পুরসভার ঘাড়ে। এর বাইরে রয়েছে অবসরপ্রাপ্ত এবং অন্যান্য খাতে ভাতার টাকা বাবদ খরচ। এই খাতেই খরচ সামলাতে মূলত হিমশিম খেতে হচ্ছে পুরসভার কোষাগারে। পুরসভার নিয়ম মেনেই প্রতি পাঁচ/ ছয় বছরে সম্পত্তিকর নির্দিষ্ট হারে বৃদ্ধি পায়। তবে নতুন করে সম্পত্তি করে এর ওপর বোঝা চাপায়নি কলকাতা পৌরসভা। এই পরিস্থিতিতে বিভিন্ন পরিষেবার জন্য পুরসভার নির্ধারিত মূল্য বদলের পথে হাঁটতে পারে কর্তৃপক্ষ। এবার এপ্রিল থেকে বাড়ছে কমিউনিটি হলের ভাড়াও। পাশাপাশি, বিনোদন করের হারেও পরিবর্তন আসছে বলে জানা গিয়েছে। পুরসভা সূত্রের খবর, যে সমস্ত জায়গায় পরিষেবার মূল্য বাড়ানোর চিন্তাভাবনা চলছে তার বেশিরভাগটাই কমার্শিয়াল বা বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে। যেমন, বাণিজ্যিক ক্ষেত্রের জঞ্জাল সাফাই করতে পুরসভা সামান্য টাকা নেয়। এই চার্জ বাড়ানো হতে পারে বলে সূত্রের খবর। এছাড়াও পার্ক, ব্যঙ্কোয়েট হলের বিনোদন কর বৃদ্ধি করা হতে পারে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে লাইসেন্স ফি বাড়ানো হতে পারে, সূত্র অনুযায়ী জানা গিয়েছে এমনটাই।
