সাধারণ মানুষকে প্রতারণার হাত থেকে বাঁচাতে এবার থেকে প্রকল্পের নূন্যতম আয়তন তিন কাঠা জমি বা ৬টা ফ্ল্যাটের বেশি হলেই প্রোমোটারকে আনা হবে রিয়েল এস্টেট রেগুলেশন অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট অ্যাক্ট (রেরা)-এর আওতায়। এর ফলে ফ্ল্যাট বেচা-কেনার ক্ষেত্রে ক্রেতা কোনওভাবে প্রতারিত হলে তাঁরা রেরা-র কাছে অভিযোগ জানাতে পারবেন।
ওয়েস্টবেঙ্গল রিয়েল এস্টেট রেগুলেটরি অথরিটি নামে একটি রাজ্যস্তরের নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ গঠন করা হয় ২০২২-এ। তাদেরই ওয়েবসাইট উদ্বোধন হয় এদিন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসে এ কথা জানিয়েছেন রাজ্যের আবাসনমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। তিনি বলেন, ‘সময়ে ফ্ল্যাট হস্তান্তর না করা, ফ্ল্যাট বিক্রির নামে প্রতারিত করা-সহ প্রোমোটারদের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের বহু অভিযোগ থাকে। এবার থেকে তাঁরা রেরা-র ওয়েবসাইটে সেই সমস্ত অভিযোগ জানাতে পারবেন। বেশি অভিযোগ দেখা যায়, ছোট প্রোমোটিংয়ের বিরুদ্ধে। ভবিষ্যতে তিন কাঠা জমির উপর অথবা ছ’টি ফ্ল্যাট বানালেই সেই প্রোমোটারকে রেরায় অন্তর্ভুক্তি করা হবে।’
প্রসঙ্গত, এতদিন সাড়ে সাত কাঠা অথবা আটটির বেশি ফ্ল্যাট বানালে সেই প্রোমোটারকে রেরার আওতায় আনা হত। সেই আইনে এবার বদল আনতে চলেছে রাজ্য। অরূপ জানান, ‘যদি প্রোমোটার, ডেভলপার উভয়পক্ষের মধ্যে স্থির করা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ফ্ল্যাটের মালিকানা হস্তান্তর করতে ব্যর্থ হন, তবে ক্রেতার ইচ্ছা অনুযায়ী হয় তিনি ক্রেতার দেওয়া সম্পূর্ণ অর্থ সুদ-সহ ফেরৎ দেবেন। অথবা তিনি বিলম্বিত সময়ের জন্য ক্ষতিপূরণ-সহ বাড়ির ফ্ল্যাটের দখল প্রদান করবেন।’
আবাসন দফতরের কর্তারা জানাচ্ছেন, এই রাজ্যে রেরা আইন ও বিধি প্রয়োগ রাজ্যের আবাসন ক্ষেত্রের দৃশ্যপটকে অনেকটা পরিবর্তন করবে। আগে আবাসন ক্ষেত্রকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য কোনও বিশেষ আইন ছিল না। এখন প্রোমোটার, ডেভলপার, রিয়েল এস্টেট ব্রোকার এবং আবাসনের ক্রেতারা একটি অভিন্ন আইনের ছত্রছায়ায় চলে আসবে। এবং একইসঙ্গে আবাসনের ক্রেতাদের স্বার্থ রক্ষা হবে। ক্রেতাকে লোভ দেখিয়ে ফ্ল্যাট বিক্রির অশুভ প্রবণতা বন্ধ হবে প্রোমোটারদের। শুধু নতুন প্রকল্প নয়, নির্মীয়মাণ প্রকল্পগুলোকেও রাজ্যের রেরাতে নিবন্ধীকরণ বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। তিন মাসের মধ্যে মানে এপ্রিলের মধ্যে তা করতে হবে।