সোমবার ৪৬তম কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলার উদ্বোধন সেরেই বীরভূম সফরে রওনা দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিকেলে সোনাঝুড়ির হাট ঘুরে তাঁর প্রথম গন্তব্য ছিল অমর্ত্য সেনের শান্তিনিকেতনের ঠিকানা ‘প্রতীচী’। সেখানে গিয়েই গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা করলেন মমতা। জমি দখলের অভিযোগ নিয়ে অমর্ত্য সেন এবং বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের মধ্যে সংঘাত চরমে উঠেছে। নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদের পাশে থাকার বার্তা দিয়ে তাঁর নিরাপত্তাও বাড়িয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর নির্দেশ, অমর্ত্যকে এখন থেকে রাজ্যের তরফে জেড প্লাস নিরাপত্তা দিতে হবে। সেই মতো পুলিশ প্রশাসনকে শীঘ্র পদক্ষেপ নিতে বলেন মমতা। ঘটনাচক্রে, মুখ্যমন্ত্রীও জেড প্লাস নিরাপত্তা পান। এ বার থেকে তাঁর সমতুল্য নিরাপত্তাই পাবেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ।
এদিন অমর্ত্য সেনের সঙ্গে আলাপচারিতায় মুখ্যমন্ত্রী জানান, বিশ্বভারতীর জমির সরকারি নথিপত্রও তিনি সঙ্গে করেই এনেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘অনেক দিন ধরে সহ্য করেছি। আজ সব নথি সঙ্গে করেই এনেছি। এর শেষ দেখে ছাড়ব!’’ তখনই পাশে দাঁড়ানো বীরভূমের পুলিশ সুপার নগেন্দ্রনাথ ত্রিপাঠীর কাছে অমর্ত্যের নিরাপত্তার বিষয়েও জানতে চান মমতা। এর পরেই নোবেলজয়ীর জন্য জেড প্লাস নিরাপত্তার ঘোষণা করেন তিনি। পুলিশের সুপারের উদ্দেশে বলেন, ‘‘উনি (অমর্ত্য) যখন বাড়ি থেকে বেরোবেন, জেড প্লাস নিরাপত্তা করে দেবে।’’ পাশাপাশিই, অমর্ত্যের বাড়ির সামনে যাতে পুলিশের ক্যাম্প রাখা হয়, তারও নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী, বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও অন্যান্য মন্ত্রী, বিধায়ক, সাংসদ, হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি, প্রথম সারির রাজনীতিক এবং শীর্ষ আমলারা সাধারণত বিভিন্ন স্তরের নিরাপত্তা পেয়ে থাকেন। সেগুলি হল ‘এক্স’, ‘ওয়াই’ এবং ‘জেড’। এর পরেও প্রতিটি ক্ষেত্রের ‘প্লাস’ নিরাপত্তা হয়। সেই হিসাবে সর্বোচ্চ জেড প্লাস। সরকারি নির্দেশে নিরাপত্তা পেয়ে থাকেন শিল্পপতি, তারকা, খেলোয়াড়-সহ বিশিষ্ট নাগরিকেরাও। প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, যাঁর জীবনে ঝুঁকি যতটা বেশি তার উপরে নির্ভর করে তিনি কোন পর্যায়ের নিরাপত্তা পাবেন। বাংলায় রাজ্যের জেড প্লাস নিরাপত্তা দু’জন পান। এক জন হলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা। দ্বিতীয় জন হলেন রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এ বার সেই তালিকায় সংযুক্ত হল অমর্ত্য সেনের নামও।