কিছুদিন আগেই খিদিরপুরে মাইকেল মধুসূদন গ্রন্থাগারের এক অনুষ্ঠানে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় রাজ্যের সরকারি গ্রন্থাগারগুলিতে রাখা বইয়ের মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। বলেছিলেন, ‘কবিতার প্রথম লাইন – এপাং ওপাং ঝপাং আমরা সবাই ড্যাং ড্যাং। এই যদি কবিতার বই হয়, কেউ পড়বে? আমার মনে হয় কেউ পড়বে না।’ এই নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে শোরগোল পড়ে গিয়েছিল। এবার যেন নাম না করে সেই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়কেই নিশানা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ‘কেন, রাজনীতির লোক কি বই লিখতে পারে না?’ সোমবার কলকাতা বইমেলার উদ্বোধন অনুষ্ঠান থেকে এই প্রশ্নই ছুঁড়ে তিনি।
মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেন, ‘রাজনীতির লোক তখনই রাজনীতি করতে পারেন, যখন তিনি একজন সামাজিক জীব হিসাবে নিজেকে আগে রক্ষিত করেন। সমাজ সংস্কারে মন দেন।’ কথা প্রসঙ্গে সমাজসংস্কারক মনীষীদের নাম তুলে ধরেন তিনি। রাজা রামমোহন রায়, বিদ্যাসাগর, নেতাজির প্রসঙ্গ টেনে আনেন তিনি। মমতা বলেন, ‘রাজা রামমোহন রায় কে ছিলেন, তখন কোনও রাজনৈতিক দল এভাবে ছিল না। সমাজ সংস্কারক হিসাবে পরিচিত ছিলেন। বিদ্যাসাগরের বর্ণপরিচয় আজও আমরা বুকে নিয়ে ঘুরি। বিবেকানন্দের একটা বই আজও খুঁজে বেড়াই, নেতাজির বই তরুণের স্বপ্ন, রবীন্দ্রনাথের গীতবিতান খুঁজে বেড়াই।’
উল্লেখ্য, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এখনও পর্যন্ত ১২৮টি বই প্রকাশিত হয়েছে। এ বছরের বইমেলায় আরও ৬টি বই প্রকাশিত হয়েছে। আরও চার-পাঁচটি বই লেখার কাজ চলছে বলে এদিন নিজেই জানান তিনি। সঙ্গে অবশ্য মুখ্যমন্ত্রী এ-ও বলেন, ‘আমি অত্যন্ত ক্ষুদ্র মানুষ। আমার সবটাই কুৎসার আঙিনায়, অপপ্রচারের আলিঙ্গনে কোথাও কোথাও…কারোর কারোও পছন্দ নাও হতে পারে, নাই হতে পারে। আমি তো সমালোচনার উর্ধ্বে নই। আমার সমালোচনা করলে আমি খুশি হই। কারণ তার থেকে আমি অনেক কিছু শিখতে পারি। সমালোচনার থেকে বড় জিনিস আর কী হতে পারে?’ মুখ্যমন্ত্রীর পর্যবেক্ষণ, ‘যে তোমায় খারাপ বলে বলুক, তুমি খারাপ বলো না।’