নরেন্দ্র মোদীর জমানায় বারবার অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের সাক্ষী থেকেছে ভারত। ক্রমশ দৈন্যের মুখে পড়েছে গ্রামীণ অর্থনীতি। এমতাবস্থায় একশো দিনের কাজ গ্রামের মানুষের অন্যতম এক আয়ের মাধ্যম। কিন্তু পরিবার পিছু জব কার্ডধারীদের গড়ে মাত্র ৪২ দিন করে কাজ মিলছে। একেবারেই তলানিতে গ্রামীণ ভারতের কর্মসংস্থান। বিরোধীদের বক্তব্য, কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে কেবল মোদী সরকারের লম্বাচওড়া বক্তৃতাই সার। চাকরি দূর অস্ত, ১০০ দিনের কাজ দিতেও চরম ব্যর্থ তারা। বাংলায় এই প্রকল্প বহু মানুষের কাজের যোগান দিচ্ছিল। রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে সেই টাকা আটকে রেখেছে মোদী সরকার। যার ফলে ধুঁকছে গ্রামীণ অর্থনীতি। পাশাপাশি মোদীর আমলে চরমে পৌঁছেছে বেকারত্ব। গত ১৬ মাসে ডিসেম্বরে কর্মহীনের সংখ্যা ছিল সর্বোচ্চ। মহাত্মা গান্ধী ন্যাশনাল এমপ্লয়মেন্ট গ্যারান্টি স্কিম অর্থাৎ ১০০ দিনের কাজে গড় কর্মদিবস নিম্নমুখী। ২০শে জানুয়ারি পর্যন্ত পাওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি অর্থ বছরে একশো দিনের কাজ প্রকল্পে প্রতি পরিবারের মাত্র ৪২ দিন কাজ নিশ্চিত করতে পেরেছে মোদী সরকার। যা গত পাঁচ অর্থবর্ষে সর্বনিম্ন। স্বভাবতই দানা বেঁধেছে বিতর্ক।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ২০২০-২১ এবং ২০২১-২২ অর্থবর্ষে পরিবারপিছু যথাক্রমে ৫২ ও ৫০ দিন কাজের সুযোগ দিতে পেরেছিল মোদী সরকার। চলতি অর্থ বছরে অর্থাৎ ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে মোট বাজেটে একশো দিনের কাজ প্রকল্পে প্রায় ৭৩ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ কমিয়েছিল মোদী সরকার। প্রসঙ্গত, একশো দিনের কাজ প্রকল্পে আনুমানিক ১০ কোটি ৩০ লক্ষ পরিবারের প্রায় ১৭ কোটি সদস্যের নাম নথিভুক্ত রয়েছে। কিন্তু মোদী সরকার বরাদ্দ কমানোয়, চলতি অর্থবর্ষে সাড়ে পাঁচ কোটি পরিবারের সাড়ে সাত কোটি সদস্য কাজ পেয়েছেন। গত ৯ই জানুয়ারি পর্যন্ত পরিসংখ্যান অনুযায়ী, মাত্র ১৩ লক্ষ ৬৯ হাজার পরিবার ১০০ দিনে কাজের কোটা পূর্ণ করতে পেরেছে। ২০২১-২২ অর্থ বছরে সংখ্যাটা ছিল পাঁচগুণ বেশি। অর্থাৎ প্রায় ৫৯ লক্ষ ২০ হাজার। কেবল বরাদ্দ কমানোই নয়, বরাদ্দের অঙ্ক দিতেও দেরি করছে মোদী সরকার। অনেক রাজ্যই বরাদ্দের প্রায় ৭০ শতাংশ অর্থ অর্থবর্ষের ছ-সাত মাসের মধ্যে খরচ করে ফেলেছে। অন্যদিকে, বাকি টাকা দিতে দেরি করছে কেন্দ্র। বেশ কিছু ক্ষেত্রে প্রাপ্য টাকা পেতে চার-পাঁচ মাস অপেক্ষা করতে হচ্ছে জব কার্ডধারীদের। উল্লেখ্য, কেন্দ্রের কাছে বাংলার বিপুল অঙ্কের একশো দিনের কাজের টাকা বকেয়া রয়েছে। যা নিয়ে সরব হয়েছে বাংলার শাসকদল তৃণমূল। সমালোচনার ঝড় উঠেছে অন্যান্য মহলেও।