ফের প্রবল বিতর্কের কেন্দ্রের সম্মুখীন ‘ডবল ইঞ্জিন’ উত্তরপ্রদেশ। দেশে মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বারবার প্রশ্নের মুখে পড়েছে নারীস্বাধীনতা ও সুরক্ষা। নানান ঘৃণ্য ও নৃশংস ঘটনার সাক্ষী থেকেছে দেশবাসী। সেগুলির মধ্যে অন্যতম হল যোগীরাজ্যের হাথরস ও উন্নাওয়ের ভয়াবহ ধর্ষণকাণ্ড। এবার এই উন্নাও ধর্ষণকাণ্ডের মূল অভিযুক্তকে এলাহাবাদ হাই কোর্টের অনুমোদনে প্যারোলে মুক্তি দিতে চলেছে যোগী আদিত্যনাথের সরকার। যা ঘিরে ইতিমধ্যেই তুঙ্গে তোলপাড়। বিগত ২০১৭ সালে এক নাবালিকাকে ধর্ষণ করেছিলেন উত্তরপ্রদেশের উন্নাওয়ের তৎকালীন বিজেপি বিধায়ক কুলদীপ সিংহ সেঙ্গার। পরে নির্যাতিতার বাবাকে খুনের ঘটনারও মূলচক্রী ছিলেন তিনি। যাবজ্জীবন জেলের সাজাপ্রাপ্ত সেই কুলদীপই এবার প্যারোলে মুক্তি পেতে চলেছেন।
প্রসঙ্গত, উত্তরপ্রদেশ সরকারের কাছে সেঙ্গার তাঁর মেয়ের বিয়েতে যোগ দেওয়ার জন্য প্যারোলে মুক্তি চেয়েছিলেন। সরকারের সুপারিশে হাই কোর্ট সেই আর্জি মঞ্জুর করে ১৫ দিনের জন্য (২৭শে জানুয়ারি থেকে ১০ই ফেব্রুয়ারি) তাঁকে প্যারোলে মুক্তি দেওয়ার কথা বলেছে। ঘটনার প্রতিবাদে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী আদিত্যনাথকে চিঠি দিয়েছেন নির্যাতিতা তরুণী। সেই সঙ্গে একটি ভিডিও সমাজমাধ্যমে পোস্ট করেছেন তিনি। তাতে অবিলম্বে সেঙ্গারের মুক্তির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি তোলা হয়েছে। নির্যাতিতার দাবি, যত দিন বিজেপির প্রাক্তন বিধায়ক জেলের বাইরে থাকবেন, তত দিন তাঁর এবং ওই মামলার সাক্ষীদের জীবনের ঝুঁকি থাকবে। ২০১৮-র এপ্রিলের গোড়ায় বিজেপির তৎকালীন বিধায়ক সেঙ্গারের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ তুলে নির্যাতিতা যখন অনশনের হুমকি দেন, তখনই প্রকাশ্যে আসে বিষয়টি। তার পরের দিনই নির্যাতিতার বাবাকে প্রচণ্ড মারধরের অভিযোগ ওঠে সেঙ্গার এবং তাঁর ভাই অতুলের বিরুদ্ধে। নির্যাতিতাকে থানায় নিয়ে যায় অতুল ও তার সঙ্গীরা। পুলিশ নির্যাতিতার বাবার বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা দেয়। পরে পুলিশি হেফাজতে মারা যান নির্যাতিতার বাবা। ধর্ষণ এবং অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলায় দোষী সাব্যস্ত হন কুলদীপ। তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা দেওয়া হয়। আর এবার তার প্যারোলে মুক্তির কথা ঘোষিত হতেই শোরগোল শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। সরব বিরোধীরা। নিন্দায় ও ক্ষোভে ফেটে পড়েছে সাধারণ মানুষও। স্বভাবতই প্রবল বিপাকে সে রাজ্যের শাসকদল বিজেপি।