নয়া উদ্যোগ নিল কলকাতা পুরসভা। এবার কালীঘাট মন্দিরের পিছন দিয়ে বয়ে যাওয়া আদি গঙ্গা বা টালি নালার সংস্কারের পদক্ষেপ নিল তারা। অনেকের মতে, ১৫-১৭ শতকে এই আদি গঙ্গা ছিল গঙ্গার মূল প্রবাহ। তবে পরবর্তী সময়ে সেই ধারা শুকিয়ে যায়। বর্তমানে তা ক্ষীণস্রোতা। ১৮ শতকে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক সরকার আদি গঙ্গার পুরানো শাখা টলি নালা সংস্কারে উদ্যোগী হয়েছিল। এবার কলকাতা পুরসভা এই আদি গঙ্গার সংস্কার নিয়ে বড় আশার কথা জানিয়েছে। ৬৫৩ কোটি টাকায় এই আদিগঙ্গা সংস্কার করা হবে বলে পুরসভা সূত্রে খবর। আদি গঙ্গাকে কেন্দ্র করে নেওয়া হচ্ছে নদীর জলকে পরিষ্কার করা, নাব্যতা বৃদ্ধি করা, জোয়ারের সময় বান নিয়ন্ত্রণের সুব্যবস্থা করার মতো বড় পরিকল্পনা।
প্রসঙ্গত, দইঘাট থেকে গড়িয়া স্টেশন দৈর্ঘ্যে প্রায় ২৭ কিলোমিটার। একদিকে জবরদখল, অন্যদিকে, দূষণ। দুইয়ের জোড়া ফলায় দীর্ঘদিন ধরেই অপরিচ্ছন্ন, অস্বাস্থ্যকর অবস্থায় পড়ে রয়েছে টালিনালা। বহু চেষ্টা করেও পরিস্থিতি আগের অবস্থায় ফেরাতে পারেনি কলকাতা পুরসভা ও রাজ্য সরকার। যার ফল ভুগতে হচ্ছে আদিগঙ্গার দু’ধারে থাকা কলকাতা ও সোনারপুর পুরসভা ৩১টি ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের। গঙ্গা থেকে টালি নালার বা আদি গঙ্গার শুরু হয়েছে দই ঘাটে। দই ঘাট থেকে বিদ্যাধরী নদীর সংযোগস্থল পর্যন্ত প্রায় ২৭ কিলোমিটার আদি গঙ্গার দৈর্ঘ্য। এক সময় এই পথেই বয়ে যেত নদীর মূল স্রোত। পরে পথ পরিবর্তনে প্রবাহ কমে। সেই সময় এই আদি গঙ্গার খনন কাজ করেন উইলিয়াম টালি। তার নামেই টালি নালা বলে আদি গঙ্গা পরিচিতি। কলকাতা পুরসভা এই প্রকল্পেকে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল। এর ফলে বদলে যেতে পারে আদি গঙ্গার চালচিত্র। এদিকে জোয়ারের সময় কালীঘাটের নীচু এলাকায় আদি গঙ্গার জল ঢুকে যায়। সমস্যা মেটানোর জন্য নানা সময় কিছু কাজ হয়েছে। এই প্রকল্পের আওতায় বিরাট কর্মযজ্ঞ করা হবে বলে জানা গিয়েছে। ২৩.৬ কিমি এলাকাজুড়ে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের কাজ করা হবে। তিনটি প্ল্যান্টও তৈরি করা হবে। সাতটি পাম্পিং স্টেশন, ৫টি মিনি পাম্পিং স্টেশন তৈরি হবে। পাশাপাশি ১১টি পাম্পিং স্টেশনের সংস্কার করা হবে বলেও জানিয়েছে পুরসভা সূত্র।