গত ৮ই জানুয়ারি থেকেই শুরু হয়েছে গঙ্গাসাগর মেলা। বিবিধ জাতি-ভাষা-রঙে উদ্বেল মেলা প্রাঙ্গণ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই ঘোষণা করেছিলেন, এবার সাগর মেলার সময় বাড়ানো হয়েছে। ৮-১৭ই জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে মেলা। ১২, ১৩ ও ১৪ই জানুয়ারি সন্ধ্যায় হবে বিশেষ আরতি। এবার সাগরমেলায় ১৫ই জানুয়ারি মকরস্নানে রেকর্ড ভিড় হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। গঙ্গাসাগরে তীর্থযাত্রীদের জন্য ইতিমধ্যেই নানারকম বিশেষ ব্যবস্থা করেছে রাজ্য সরকার। গঙ্গাসাগর মেলার ব্যবস্থা নিয়ে আগেই বিস্তারিত জানিয়েছেন মমতা। সেগুলি দেখে নেওয়া এক নজরে :
মেলার নিরাপত্তা ও নজরদারির জন্য মেগা কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। এছাড়া সাগরে ও নবান্নে রয়েছে পৃথক দু’টি কন্ট্রোল রুম।
এক টিকিটেই গঙ্গাসাগর যাতায়াত করা যাচ্ছে।
পুণ্যার্থীদের সহায়তায় রয়েছেন কয়েক হাজার ভলান্টিয়ার। ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘ ছাড়াও দেড়শর বেশি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা তাদের স্বেচ্ছাসেবকদের নামিয়েছে মেলা উপলক্ষ্যে।
নেভিগেশনের জন্য আলাদা চ্যানেল করা হয়েছে।
১১৫০টি সিসিটিভি ও ড্রোন ক্যামেরার ব্যবস্থা আছে।
২১০০ সিভিল ডিফেন্স কর্মী নিয়োগ করা হয়েছে।
মেলায় গিয়ে কারও মৃত্যু হলে থাকছে ৫ লক্ষ টাকার বিমা।
পরিবেশবান্ধব মেলা করার ক্ষেত্রে জোর দিয়েছে রাজ্য সরকার। সেইসঙ্গে প্লাস্টিকমুক্ত রাখা হচ্ছে মেলাকে।
মেলায় পুণ্যার্থীদের থেকে কোনও ধরনের কর নেওয়া হচ্ছে না।
৪টি ওয়াটার অ্যাম্বুলেন্স ও ১০০টি অ্যাম্বুলেন্স রয়েছে।
সাগর মেলার জন্য ২২৫০টি সরকারি বাস ও ৫৫০টি বেসরকারি বাস চালানো হচ্ছে।
পুলিশের সিনিয়র অফিসারদের আলাদা করে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রযুক্তিগত পরিকাঠামো দেখার জন্য বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে রাজীব কুমারকে।
৪টি বার্জ, ৩২টি ভেসেল, ১০০টি লঞ্চ থাকছে। রয়েছে ২১টি জেটি। ভেসেল ও লঞ্চে আলাদা করে জিপিএস ট্র্যাকিংয়ের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
এসএসকেএম, শম্ভুনাথ পণ্ডিত, বাঙ্গুর হাসপাতালে আলাদা করে ব্যবস্থা রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সাগরে ১০টি দমকল কেন্দ্র ও ২৫টি দমকলের ইঞ্জিন রয়েছে।
কলকাতা ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় বাস চলাচলে স্পিড লিমিট বেঁধে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মেলা প্রাঙ্গণে রান্না করা আটকাতে পুলিশের আলাদা নজরদারি চলছে।
প্রয়োজনে বিনামূল্যে ওয়াইফাই কল করা যাবে।
সব ভাষায় প্রচার করার ব্যবস্থা রয়েছে।
পাশাপাশি, এছাড়াও দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলা প্রশাসনের তরফে মেলায় যাতায়াত নিয়েও করা হয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা। গঙ্গাসাগরের যাত্রাপথকে সুগম করতে চালু হচ্ছে পিলগ্রিম ট্রান্সপোর্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম। জানা গেছে, এই নতুন ব্যবস্থার মাধ্যম ভিড় নিয়ন্ত্রণ করা আরও সহজ হবে। সাগরদ্বীপের সমস্ত পরিবহণমাধ্যমে লাগানো থাকবে জিপিএস ট্র্যাকার। এর মাধ্যমে ২৪ ঘণ্টা এইসব পরিবহণগুলির ওপর নজরদারি চালানো হবে। ফলে, দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব হবে বলে, জানাচ্ছে প্রশাসন। কোভিডবিধি নিয়ন্ত্রণের জন্য বিশেষ টিমও তৈরি করেছে রাজ্য। যা পর্যবেক্ষণ করছে পরিস্থিতি। রাজ্যের স্বাস্থ্য সচিব সঞ্জয় বনসল টিমের দায়িত্বে রয়েছেন।