যাত্রা শুরুর দিন থেকেই মোদীর সাধের বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের যেন শনির দশা চলছে! কিছুদিন আগেই মোষের পালের ধাক্কায় গৈরতপুর-বতবা স্টেশনের মাঝে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল ভারতে তৈরি এই সেমি হাই স্পিড ট্রেনটি। তার পর একবার গরু এবং একবার ষাঁড়ের গুঁতো খেয়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিল। আবার, সম্প্রতি বাংলায় বন্দে ভারতে চালু হতেই পর পর দু’বার পাথর ছোঁড়া হয়েছে সেই ট্রেনে। ফলে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ট্রেনের বাইরের কাচ। রাজনৈতিক রংও লেগেছে এই ঘটনায়। তবে বৃহস্পতিবার পূর্ব রেলের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, বাংলা নয়, বন্দে ভারতে পাথর ছোঁড়া হয়েছিল বিহার থেকে। তবে এই প্রথম নয়। জন্মলগ্ন থেকেই পাথরবাজদের নিশানায় থেকেছে এই ট্রেন। বার বার পাথর ছোঁড়া হয়েছে বন্দে ভারতে।
প্রসঙ্গত, নয়াদিল্লী থেকে কানপুর এবং এলাহাবাদ হয়ে বারাণসী পর্যন্ত প্রথম বন্দে ভারত ট্রেনটি চালু হয়েছিল ২০১৯-এর ফেব্রুয়ারিতে। কিন্তু ‘ট্রেন-১৮’ নামে এই ট্রেনের পরীক্ষামূলক যাত্রার সময়েই তাতে ঢিল পড়েছিল। ভেঙে গিয়েছিল জানলার কাচ। এর পর ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিল, এই দু’মাসে কমপক্ষে ১২ বার ঢিল মেরে প্রথম বন্দে ভারত ট্রেনের কাচ ভাঙা হয়েছিল। তা-ও আবার বিজেপি শাসিত উত্তরপ্রদেশে। দিল্লী থেকে বারাণসীর দিকে যাত্রা করার সময়। বিজেপির শাসনকালে এই ট্রেন চালু করে রেলমন্ত্রক। শুধু তাই নয়। খোদ যোগী রাজ্য উত্তরপ্রদেশেও মোদীর ‘স্বপ্নের’ ট্রেনে পাথর ছোঁড়া হয়েছিল। অন্যদিকে, দিল্লী-বারাণসী বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের পর একে একে আরও ছ’টি বন্দে ভারত এক্সপ্রেস ভারতে চালু হয়েছে। পাথরের হামলা থেকে রক্ষা পায়নি এই ট্রেনগুলিও।
বন্দে ভারতের দ্বিতীয় ট্রেন চালু হয়েছিল ২০১৯-এর অক্টোবরে। কিন্তু এই ট্রেনের পরীক্ষামূলক যাত্রার সময়ও একই ঘটনা ঘটে। পাথর মেরে ভেঙে দেওয়া হয় ট্রেনটির সামনের কাচ। আবার, খোদ মোদী রাজ্য গুজরাতের গান্ধীনগর থেকে মুম্বইগামী বন্দে ভারতের তৃতীয় ট্রেনেও একাধিক বার পাথর ছোড়ার ঘটনা ঘটেছে। নভেম্বরে এই ট্রেনে চেপে আমদাবাদ থেরে সুরত যাচ্ছিলেন ‘অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন’ (মিম)-এর প্রধান আসাউদ্দিন ওয়েইসি। সঙ্গে ছিলেন দলের একাধিক নেতা। মিম-এর নেতা ওয়ারিস খান দাবি করেন, তাঁদের যাত্রা করার সময় কিছু অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি কামরা লক্ষ্য করে পাথর ছোঁড়ে। যার ফলে ক্ষতিগ্রস্থ হয় ওই কামরার জানলার কাচ। এর পরের তিনটি বন্দে ভারত অর্থাৎ, দিল্লী-উনা, চেন্নাই-মাইসুরু এবং বিলাসপুর-নাগপুরগামী বন্দে ভারতেও বিক্ষিপ্ত ভাবে পাথর ছোঁড়ার ঘটনা ঘটেছে।