২০১৬-র ৮ নভেম্বর রাত। প্রধানমন্ত্রী একটা ঘোষণা নাড়িয়ে দিয়েছিল গোটা দেশকে। কারণ, জাতীয় উদ্দেশে ভাষণে সেইদিন ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট বাতিল করেছিলেন নরেন্দ্র মোদী। সুপ্রিম কোর্ট মোদীর সেই সিদ্ধান্তকে ‘নির্ভুল’ বলে রায় দিলেও, বিচারপতি বিভি নাগারত্না একে ‘বেআইনি’ বলে মন্তব্য করলেন। যে যে লক্ষ্য সামনে রেখে ২০১৬ সালে নোটবন্দী করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার, সেগুলির অধিকাংশই পূরণ করা যায়নি বলে জানিয়েছেন তিনি। বিচারপতির এই ‘বিরুদ্ধ মত’কে স্বাগত জানালেন বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা তথা দেশের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম। তাঁর মতে এটা কেন্দ্রীয় সরকারের গালে ‘সপাটে চড়’।
চিদম্বরম বলেন, সুপ্রিম কোর্টের রায় নিয়ে কোনও তর্ক চলে না। আদালত যে রায় দেয়, তা নতমস্তকে মেনে নেওয়াই দস্তুর। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের বিশেষ সাংবিধানিক বেঞ্চের রায় খুঁটিয়ে পড়লে দেখা যাবে, মোদী সরকারের এই সিদ্ধান্তের সাফল্য নিয়ে ভারতের সর্বোচ্চ আদালত কিন্তু প্রশ্ন তুলে দিল। সিদ্ধান্তের সাফল্য নিয়ে প্রশ্ন না উঠলে, পাঁচ বিচারপতির পাঁচজনই একমত হতেন। সোমবারের রায়ে সেটা কিন্তু হয়নি। তাছাড়া বিচারপতি বিভি নাগারত্ন সিদ্ধান্ত সাংবিধানিক মানতে অস্বীকার করেছেন। আরও একটি বিষয় লক্ষ্য করার মতো। পাঁচ বিচারপতি কিন্তু মোদী সরকারের নোট বাতিলের সাফল্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। ফলে, মোদী সরকারের জয় হয়েছে বলে যারা মনে করছেন বা দাবি করছেন, তাদের প্রত্যেকের কাছে অনুরোধ সুপ্রিম কোর্টের রায় ভাল করে পড়ে দেখুন। ভারতের সর্বোচ্চ আদালত বলেছে, সরকারের সিদ্ধান্ত সাংবিধানিক। কেন সাংবিধানিক, সেটাও আদালত জানিয়ে দিয়েছে। আদালত কিন্তু একবারের জন্য বলেনি, যে লক্ষ্য নিয়ে এই নোট বাতিল। তা সফল হয়েছে কিনা সেটা দেখা দরকার।
