মোদী সরকারের বিরুদ্ধে মুখ খুললেই বিরোধীদের চুপ করাতে কেন্দ্রীয় এজেন্সি লেলিয়ে দেয় বিজেপি। বারবারই এই অভিযোগ করে এসেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ দেশের বিরোধী নেতা-নেত্রীরা। এবার তাদের প্রতিহিংসার রাজনীতির শিকার লালুপ্রসাদ যাদব৷ আরজেডি প্রধানের বিরুদ্ধে ফের নতুন করে ডিএলএফ ঘুষ কেলেঙ্কারির মামলা শুরু করল সিবিআই। ২০২১ সালে এই মামলা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তরফে বলা হয়েছিল, লালুর বিরুদ্ধে যথাযথ প্রমাণ পাওয়া যায়নি। কিন্তু নীতিশ কুমারের জেডিইউয়ের সঙ্গে হাত মিলিয়ে সরকার গড়ার কয়েক মাস পরেই আবার এই মামলা নতুন করে শুরু করতে চলেছে সিবিআই। প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগেই কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট হয়েছে বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর। আপাতত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি।
২০১৮ সালে লালু প্রসাদ যাদবের বিরুদ্ধে মামলা শুরু করে সিবিআই। ইউপিএ সরকারে রেলমন্ত্রী থাকার সময়ে তাঁর বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ ওঠে। দেশের অন্যতম বৃহৎ রিয়েল এস্টেট সংস্থা ডিএলএফের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা মুম্বই-বান্দ্রা রেল প্রজেক্টের জমি লিজ পাওয়ার জন্য এবং নিউ দিল্লী রেল স্টেশন বানানোর ঠিকা পাওয়ার জন্য তৎকালীন রেলমন্ত্রী লালু প্রসাদ যাদবকে ঘুষ দেয়। এই চুক্তি এবং লিজ পাইয়ে দেওয়ার পরিবর্তে উপঢৌকন হিসেবে দক্ষিণ দিল্লীর একটি জমি লালুর ছেলে তেজস্বী যাদব এবং দুই মেয়ে রাগিনি এবং চন্দ্রা যাদবেকে দান করে ডিএলএফেরই শেল কোম্পানি এবি এক্সপোর্ট। লালু ছাড়াও সিবিআই তদন্তের নজরে ছিলেন বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী লালুপুত্র তেজস্বী যাদব। সেই সঙ্গে সিবিআইয়ের অভিযোগপত্রে নাম ছিল চন্দ্রা ও রাগিনিরও।
তবে ২০২১ সালের মে মাসে সিবিআইয়ের তরফে জানানো হয়, বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি। মামলা চালিয়ে যাওয়ার মতো উপযুক্ত প্রমাণ নেই, এই যুক্তি দেখিয়ে লালুর বিরুদ্ধে তদন্ত বন্ধ করে দেয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সোমবার জানা যায়, বন্ধ করে দেওয়া মামলা আবার নতুন করে শুরু করতে চলেছে সিবিআই। কেন মামলা শুরু হল, তা নিয়ে অবশ্য কিছু বলেনি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। আগেও একাধিকবার অভিযোগ উঠেছে, কেন্দ্রীয় সরকারের হাতের পুতুল হিসাবে কাজ করে তদন্তকারী সংস্থাগুলি। এনডিএ জোট ছেড়ে বেরিয়ে লালুর সঙ্গে জোট বাঁধেন নীতিশ কুমার। বিজেপিকে সরিয়ে বিহারে মহাজোটের সরকার গড়েন তাঁরা। উপমুখ্যমন্ত্রীর পদে বসেন তেজস্বী যাদব। এহেন পরিস্থিতিতে আবারও প্রতিহিংসার অভিযোগ মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে।