বছর ঘুরলেই পঞ্চায়েত নির্বাচন বাংলায়। তার আগে ফের বিপাকে বঙ্গ বিজেপি। মুখ পুড়ল বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর। পঞ্চায়েত ভোটের আগেই শুভেন্দুর বিধানসভা কেন্দ্র নন্দীগ্রামে বিরাট জয় পেল তৃণমূল। শুক্রবার, ভেটুরিয়া সমবায় সমিতির ভোটে ১২টি আসনেই হেরে গেল বিজেপি, বাম। সবক’টি আসন গেল তৃণমূল সমর্থিত প্রার্থীদের ঝুলিতে। শুক্রবার সকাল থেকেই টানটান উত্তেজনা ছিল নন্দীগ্রামে। গণনা শেষে দেখা যায়, মোট ১২টি আসনই জিতে নিয়েছেন তৃণমূল সমর্থিত প্রার্থীরা। একটি আসনও জিততে পারেনি নন্দীগ্রামের বিধায়ক শুভেন্দুর দলের সমর্থিত প্রার্থীরা। বিরোধী দলনেতার খাসতালুকে এ ভাবে বিজেপিকে হারানোর পর উল্লাসে ফেটে পড়েন তৃণমূল সমর্থেকেরা। বিজেপির একটি ক্যাম্প অফিস ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে পাল্টা বিজেপির বিরুদ্ধেই বহিরাগত এনে গণনায় কারচুপির চেষ্টার অভিযোগ করেছে ঘাসফুল শিবির।
এপ্রসঙ্গে তৃণমূলের কটাক্ষ, নন্দীগ্রামে শুভেন্দুর সমস্ত দাপট সাফ হয়ে যাচ্ছে। পঞ্চায়েতে বাকিটাও হয়ে যাবে। দলের তরফে নন্দীগ্রামের দায়িত্বপ্রাপ্ত কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘নন্দীগ্রামে আজ (শুক্রবার) সকাল থেকে গোলমাল করেছে বিজেপি। আমরা পুলিশ প্রশাসনকে জানিয়েছিলাম। নন্দীগ্রাম ২-য়ে সমবায়ের ভোট, আর সেখানে নন্দীগ্রাম ১ এবং অন্যান্য বাইরের এলাকার লোককে কেন ঢোকাল শুভেন্দু? বহিরাগতদের দিয়ে গোলমাল করার চেষ্টা করেছিল শুভেন্দু। আমাদের দলের স্থানীয় লোকেরা তা প্রতিহত করেছে। তা করতে গিয়ে আমাদের ছেলেরা রক্তাক্ত হয়েছে। শুভেন্দুর পায়ের তলা থেকে মাটি সরছে এটা তার সবচেয়ে বড় প্রমাণ। বাম-রাম মিলেও কিছুই করতে পারল না। এ বার শুভেন্দু কোথায় যাবে!’’
প্রসঙ্গত, উল্লেখ্য ভোটের আগে নন্দীগ্রামের একটি সমবায় ভোটের ফলকে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। কারণ, নন্দীগ্রামে এক দিকে যেমন রাজ্যে জমি আন্দোলনের আঁতুড়ঘর বলে পরিচিত, তেমনই এই কেন্দ্রেই গত বিধানসভা ভোটে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হারিয়েছিলেন শুভেন্দু। বস্তুত, নন্দীগ্রামের ভোটের ফলের জেরেই রাজ্য বিজেপিতে আলাদা পরিচিতিও পেয়ে থাকেন শুভেন্দু। কিন্তু পঞ্চায়েত ভোটের আগে সেই শুভেন্দুর গড়ে বিজেপির এহেন ভরাডুবি স্বাভাবিকভাবেই চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে দলীয় নেতৃত্বের অন্দরমহলে।