শুরু হয়ে গিয়েছে ভোটের কাউন্টডাউন। সরগরম রাজ্য-রাজনীতি। ২০২৩-এর মে মাসেই বাংলায় অনুষ্ঠিত হতে চলেছে ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচন। আগামী ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে এই নির্বাচন বাংলার রাজনীতিতে বেশ তাৎপর্যপূর্ণ পূর্ণ। বিশেষভাবে চিন্তিত বিজেপি। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে মুখ থুবড়ে পড়ার পরে সেভাবে ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি তারা। পঞ্চায়েত নির্বাচনে ফল কিছুটা হলেও আশাব্যঞ্জক না হলে ৫ বছর আগে জেতা ১৮টি আসন ধরে রাখা তাদের কাছে বেশ কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। অন্যদিকে একুশের বিধানসভা নির্বাচনে বাংলা থেকে বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া বাম-কংগ্রেসের কাছেও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে চলেছে পঞ্চায়েত নির্বাচন। এবার রাজ্যের ভোটার তালিকায় যুক্ত হতে চলেছে প্রায় সাড়ে ১৩ লক্ষ নতুন নাম। রাজ্য নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ৯ই নভেম্বর থেকে চলতি মাসের ৮ তারিখ পর্যন্ত রাজ্যজুড়ে চলেছে ‘স্পেশাল রিভিশন অব ইলেক্টোরাল রোলস’ প্রক্রিয়া। এই সময়কালে বিপুল সংখ্যক আবেদন জমা পড়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের কাছে। এর মধ্যে একটা বড় অংশই হবু ভোটার, যাঁরা প্রথমবার নাম তুলতে চাইছেন। কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, এবারে ভোটার তালিকায় নতুন নাম তোলা এবং বিভিন্ন সংশোধনীর জন্য প্রায় ৩২ লক্ষ ফর্ম পড়েছে। তার মধ্যে সাড়ে ১৩ লক্ষ নাম নতুন তথা হবু ভোটারদের। আগেই ১৮ বছর পূর্ণ হয়ে গিয়েছে এমন ফর্মই জমা পড়েছে ১০ লক্ষের মতো। জানুয়ারি মাসে ১৮ বছর পূর্ণ হবে এমন ফর্ম জমা পড়েছে সাড়ে ৩ লক্ষ।
অতএব, পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে সব মিলিয়ে রাজ্যজুড়ে সাড়ে ১৩ লক্ষ নতুন ভোটার যুক্ত হতে চলেছে ভোটার তালিকায়। এই নতুন ভোটারদের মধ্যে সবাই গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় থাকে না। তবে তারপরেও যে অংশটা থেকে যায় পঞ্চায়েত নির্বাচনে যে কোনও আসনের ফলাফল বদলে দেওয়ার পক্ষে সেটা বেশ যথেষ্টই। রাজ্য নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি বছর থেকেই প্রতি বছরে দেশের নাগরিকদের বছরে ৪বার সুযোগ দেওয়া হবে ভোটার তালিকায় নাম তোলার জন্য। সেই হিসাবে মার্চ-এপ্রিল মাসেও আরও একবার সুযোগ থাকবে ভোটার তালিকায় নাম তোলার জন্য। যদিও জানুয়ারি মাসে যে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা বার হবে সেই তালিকা দিয়েই পঞ্চায়েত নির্বাচন হওয়ার কথা। অর্থাৎ কমবেশি প্রায় ১০ লক্ষ নতুন ভোটার এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রথমবার তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে রাজ্যজুড়ে এবারে ভোটার তালিকায় নতুন নাম তোলা এবং বিভিন্ন সংশোধনীর জন্য প্রায় ৩২ লক্ষ ফর্ম পড়েছে। তার মধ্যে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায় সর্বাধিক আবেদন জমা পড়েছে। সেখানে সংখ্যাটা হল ৪ লক্ষ ৮৬ হাজার। তারপরেই রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা। সেখানে আবেদন জমা পড়েছে ৪ লক্ষ ২১ হাজার। এই দুই জেলা থেকেই আবার সব থেকে বেশি নতুন নাম যুক্ত করার জন্য আবেদন জমা পড়েছে। উল্লেখ্য, এই দুটি জেলাই বাংলার শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের মজবুত ঘাঁটি হিসাবে সুপরিচিত।