সিবিআইয়ের হেফাজতে বগটুই-কাণ্ডের অন্যতম অভিযুক্ত লালন শেখের রহস্যমৃত্যু নিয়ে ইতিমধ্যেই তোলপাড় রাজনৈতিক আবহ। ক্ষোভে ফেটে পড়েছে রামপুরহাট। সিবিআইয়ের কঠোর শাস্তির দাবি করেছে লালনের পরিবার। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী তদন্তে নেমেছে সিআইডি। শুক্রবারই সিআইডি আধিকারিকদের একটি দল পৌঁছন বগটুইয়ে। লালন শেখের স্ত্রী রেশমা বিবির বয়ান রেকর্ড করতে চান তাঁরা। এদিনই সেই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে বলে জানা যাচ্ছে। লালন শেখের যে মূল বাড়ি, সেখানে তাঁর স্ত্রী ও মেয়ে নেই। তাঁর বাবার বাড়িতে রয়েছেন রেশমা বিবি। এই মামলায় রেশমা বিবির আগে রেকর্ড করা হয়েছে জাহাঙ্গির শেখের বয়ান। জাহাঙ্গির শেখ এই মামলায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। বগটুই মামলার আরেক অন্যতম অভিযুক্ত জাহাঙ্গির শেখও লালন শেখের সঙ্গে রামপুরহাটের সিবিআই ক্যাম্প অফিসে ছিলেন। সিবিআই ক্যাম্প অফিসে তিনি ২ দিন ছিলেন। সেদিন ঠিক কী ঘটেছিল, তিনি কী দেখেছিলেন, তা জাহাঙ্গিরের মুখ থেকে শুনেছেন সিআইডি আধিকারিকরা। ক’টার সময়ে লালনকে গ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, কখন ফিরেছেন,সেই সব তাঁর কাছে জেনেছেন তদন্তকারীরা।
উল্লেখ্য, লালনের স্ত্রী রেশমা বিবি তিন পাতার অভিযোগ করেছেন। অন্তত ৭ জন সিবিআই আধিকারিকের নাম রয়েছে। তাঁদের কী ভূমিকা ছিল, কেন তাঁদের নাম এফআইআর-এ রয়েছে, সেগুলিও জানতে চায় সিআইডি। সিবিআই-এর বিরুদ্ধে ৩০২ ধারায় খুনের মামলা রুজু করেছেন রেশমা। সেক্ষেত্রে খুনের উদ্দেশ্য কী থাকতে পারে, সেটাই রেশমার থেকে জানতে চাইছেন তদন্তকারীরা। রেশমার কোন কোন ক্ষেত্রে সন্দেহ রয়েছে, দুজন শীর্ষ সিবিআই আধিকারিক অর্থাৎ ডিআইজি সিবিআই ও এসপি সিবিআই- তাঁদের বিরুদ্ধেও নির্দিষ্ট করে রেশমার কী অভিযোগ, জানতে চায় সিআইডি। উল্লেখ্য, অভিযুক্তের তালিকায় দু’জন এমন সিবিআই আধিকারিকের নাম রয়েছে, যাঁরা গরু পাচার মামলার তদন্ত করেছেন। কিন্তু তাঁদের এক্ষেত্রে কী ভূমিকা রয়েছে, সেটাও রেশমার মুখে শুনতে চান তদন্তকারীরা। তবে লালনের স্ত্রী একজন অত্যন্ত সাধারণ গ্রাম্য মহিলা। তিনি কীভাবে এতজন উচ্চ পদস্থ সিবিআই আধিকারিকের নাম জানলেন? উঠছে সে প্রশ্নও। লালনের মৃত্যু রহস্যের তদন্তে রেশমার বয়ান অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
