পর্তুগিজ আক্রমণের সামনে ছিন্নভিন্ন হয়ে গেল সুইস রক্ষণ। মঙ্গলবার সুইৎজারল্যান্ডকে গোলের মালা পরিয়ে বিশ্বকাপের শেষ আটে পৌঁছল ফের্নান্দো স্যান্টোসের ছেলেরা। এদিন রোনাল্ডোর বদলে প্রথম একাদশে ছিলেন ২১ বছরের গনসালো রামোস। বিশ্বকাপে প্রথম বার খেলতে নেমে উজ্জ্বল হয়ে রইলেন তিনি। করলেন নয়নাভিরাম হ্যাটট্রিক করলেন রামোস একটি করে গোল করলেন পেপে, গুয়েরেরো ও লিয়াও। সুইৎজৃরল্যান্ডের হয়ে একটি গোল শোধ করেন আকাঞ্জি। ৬-১ গোলে সুইৎজারল্যান্ডকে হারিয়ে বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে উঠল পর্তুগাল। এদিন খেলার শুরুটা দু’দল কিছুটা রক্ষণাত্মক করেছিল। গোল খেতে চাইছিল না তারা। রক্ষণ সামলে তার পর আক্রমণে উঠছিল। প্রথম ১০ মিনিটে দু’দলই আক্রমণ করে। কিন্তু তাতে ধার কম ছিল। ফলে গোলের মুখ খুলতে পারেনি কেউ। ধীরে ধীরে খেলার দখল নেয় পর্তুগাল। তার ফলও মেলে। ১৭ মিনিটের মাথায় গোল করে পর্তুগালকে এগিয়ে দেন গনসালো রামোস। থ্রো থেকে বক্সের মধ্যে রামোসকে পাস দেন জোয়াও ফেলিক্স। প্রথম পোস্টে থাকা গোলরক্ষকের পাশ দিয়ে জোরালো শটে গোল করেন রামোস। এরপর ধীরে ধীরে খেলায় ফেরার চেষ্টা করে সুইৎজারল্যান্ড। কয়েকটি আক্রমণ তুলে আনে তারা। ৩০ মিনিটের মাথায় বক্সের বাইরে ফ্রিকিক পেয়েছিল সুইৎজারল্যান্ড। বাঁ পায়ে শাকিরির জোরালো ফ্রিকিক গোলকিপারের হাতে লেগে কর্নার হয়ে যায়। কিন্তু ৩ মিনিট পরে আবার গোল করে পর্তুগাল। কর্নার থেকে বক্সে বল ভাসিয়ে দেন ব্রুনো ফের্নান্দেস। শূন্যে শরীর ভাসিয়ে জোরালো হেডে বল জালে জড়িয়ে দেন পেপে। বিশ্বকাপের নকআউটে সব থেকে বেশি বয়সী ফুটবলার হিসাবে গোল করলেন ৩৯ বছরের সেন্টার ব্যাক।
এরপর ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে আরও বেশি আক্রমণাত্মক খেলা শুরু করে পর্তুগাল। পাঁচ মিনিটের ব্যবধানে আরও দু’টি গোল করে তারা। ৫১ মিনিটের মাথায় বল নিয়ে ডান প্রান্ত ধরে ওঠেন দিয়োগো দালত। তিনি ক্রস রাখেন বক্সে। বাঁ পায়ের টোকায় গোলরক্ষকের পায়ের তলা দিয়ে বল জালে জড়িয়ে দেন রামোস। ৫৬ মিনিটের মাথায় আবার গোল করে পর্তুগালের। এ বার গোলদাতা রাফায়েল গুয়েরেরো। বক্সের বাইরে বল পেয়ে গতি বাড়িয়ে বক্সে ঢোকেন তিনি। তার পরে বাঁ পায়ের জোরালো শটে গোল করেন। ৫৮ মিনিটের মাথায় একটি গোল শোধ করে সুইৎজারল্যান্ড। শাকিরির কর্নার থেকে বল সতীর্থের মাথায় লেগে আসে আকাঞ্জির সামনে। বাঁ পায়ের টোকায় বল জালে জড়িয়ে দেন তিনি। কিন্তু তাতে পর্তুগাল সমস্যায় পড়েনি। কারণ, গোলের খিদে আরও ছিল তাদের। ৬৭ মিনিটের মাথায় নিজের হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন রামোস। নিজেদের মধ্যে বল খেলে বক্সের মধ্যে তাঁর দিকে বল বাড়ান ফের্নান্দেস। আগুয়ান গোলরক্ষকের মাথায় উপর দিয়ে বল জালে জড়িয়ে দেন রামোস। ৭৩ মিনিটের মাথায় রামোসকে তুলে নেন কোচ। পরিবর্ত হিসাবে মাঠে নামেন রোনাল্ডো। নেমেই একটি ফ্রিকিক পান তিনি। কিন্তু রোনাল্ডোর শট সুইস ফুটবলারদের দেওয়ালে প্রতিহত হয়। ৮৩ মিনিটের মাথায় একটি গোল করেন রোনাল্ডো। কিন্তু অফসাইডের কারণে সেই গোল বাতিল হয়। অতিরিক্ত সময়ে বাঁ প্রান্তে বল ধরে বক্সে ঢুকে ডান পায়ের বাঁক খাওয়ানো শটে পর্তুগালের ছ’নম্বর গোল করেন রাফায়েল লিয়াও। ৬-১ গোলে ম্যাচ জেতে পর্তুগাল। কোয়ার্টার ফাইনালে মরক্কোর বিরুদ্ধে খেলবে তারা।