একের এর এক গোলের সুযোগ নষ্ট! শেষমেশ যার মাশুল গুনে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকেই গেল বেলজিয়াম। সারা ম্যাচে আধিপত্য বহাল রাখলেও ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে গোলশূন্য ড্র করলেন হ্যাজার্ডরা। উল্লেখ্য, বেলজিয়ামের এই দলের অনেক ফুটবলারকেই আর সামনের বিশ্বকাপে দেখা যাবে না। কিছু দিন আগেই বেলজিয়ামের তারকা ফুটবলার কেভিন দ্য ব্রুইন বলেছিলেন, বিশ্বকাপ জেতার ক্ষমতা নেই তাঁদের। কারণ দলের ফুটবলাররা বুড়ো হয়ে গিয়েছেন। সেই কথা যে নেহাত ফেলনা নয়, তা বোঝা গেল এদিন। গত বারের তৃতীয় স্থানাধিকারী বেলজিয়াম কাপ জেতা তো দূর, বিদায় নিল এবারের গ্রুপ পর্ব থেকেই। ইপিএল-সহ ইউরোপের বিভিন্ন লিগে দাপটের সঙ্গে খেলেন বেলজিয়ামের প্রথম একাদশের প্রায় সব ফুটবলার। তা সত্ত্বেও দেশের হয়ে তাঁরা চূড়ান্ত ব্যর্থ। বিশ্বকাপে চোখে পড়েনি তাঁদের ঐক্য।
বৃহস্পতিবার ম্যাচের শুরু থেকেই দুই দল আক্রমণ তুলে আনছিল। তবে বেশি দাপট নিয়ে খেলছিল বেলজিয়ামই। রক্ষণে দুর্ভেদ্য হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন জ্যান ভার্টোঙ্গেন এবং টবি অল্ডারওয়েরেল্ড। আক্রমণে তেমনই ঝড় তুলছিলেন কেভিন দ্য ব্রুইন এবং ইয়ানিক কারাস্কোরা। তবে খেলার বিপরীতে ১৫ মিনিটেই পেনাল্টি পেয়ে যায় ক্রোয়েশিয়া। বক্সের মধ্যে পড়ে যান কারাস্কো। তাঁকে আঘাত করেন ক্রামারিচ। সেই পেনাল্টি নিয়ে দীর্ঘ ক্ষণ চলে টালবাহানা। পেনাল্টি স্পটে বল বসিয়ে অপেক্ষা করছিলেন লুকা মদ্রিচ। এমন সময় রেফারি ভার-এর সঙ্গে আলোচনা করার সিদ্ধান্ত নেন। দেখা যায় আক্রমণের সময়ই অফসাইডে ছিলেন ক্রোয়েশিয়ার দেজান লোভরেন। ফলে পেনাল্টির সিদ্ধান্ত বাতিল করে বেলজিয়ামকে ফ্রিকিক দেওয়া হয়। এরপর ৩৩ মিনিটের মাথায় ব্রোজোভিচের শট দারুণ ভাবে বাঁচিয়ে দেন বেলজিয়ামের ডেনডকার। বিরতির কিছু ক্ষণ আগে অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয় ক্রামারিচের শট। তার পরেই ক্রোয়েশিয়ার জুরানোভিচের একটি হেড গোললাইন থেকে ক্লিয়ার হয়ে যায়।
ম্যাচের ৫১ মিনিটের মাথায় দ্য ব্রুইনের শট গোলের বাইরে দিয়ে বেরিয়ে যায়। তিন মিনিট পরে ব্রোজোভিচের শট বাঁচিয়ে দেন বেলজিয়াম গোলকিপার থিবো কুর্তোয়া। পরের মিনিটেই তিনি মদ্রিচের শট বাঁচান। গোলের লক্ষ্যে লুকাকুকে নামিয়েছিলেন মার্তিনেস। ৬০ মিনিটে সেই লুকাকুর শট পোস্টে লাগে, যা অনায়াসে গোল করা উচিত ছিল ইন্টার মিলান তারকার। দু’মিনিট পরে আবার সুযোগ নষ্ট করেন তিনি। দ্য ব্রুইনের ক্রস থেকে ফাঁকায় দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় বল পেলেও বাইরে হেড করেন। এর পর বেশ কিছু ক্ষণ দুই দলের উল্লেখযোগ্য আক্রমণ করেনি। তবে দুই দলই গোলের সন্ধানে মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছিল। নির্ধারিত সময় শেষের তিন মিনিট আগে আবার সুযোগ নষ্ট করেন লুকাকু। মিউনিয়েরের ভাসানো বলে সরাসরি হেড করার বদলে বুকে রিসিভ করতে যান। সঙ্গে সঙ্গে বল ধরে নেন ক্রোয়েশিয়ার গোলকিপার। ওখানেই জয়ের আশা কার্যত শেষ হয়ে যায় বেলজিয়ামের। গ্রুপের অন্য ম্যাচে মরক্কো ২-১ ব্যবধানে কানাডাকে হারানোয় গ্রুপ শীর্ষে থেকে পরের পর্বে গেল তারা। গ্রুপের দ্বিতীয় স্থানাধিকারী দল হিসেবে শেষ ষোলোয় পৌঁছল ক্রোয়েশিয়া।