শেষমেশ বাজিমাত করল ইংরেজরাই। গত বৃহস্পতিবার সেমিফাইনালে ভারতকে হারানোর পর আজ ফাইনালে পাকিস্তানকে হারিয়ে নিজেদের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেতাব জিতলেন বাটলাররা। এদিন মেলবোর্নে টসে জিতে প্রথমে বল করার সিদ্ধান্ত নেয় ইংল্যান্ড। শুরু থেকেই আঁটোসাঁটো বোলিং করছিলেন বেন স্টোকস, ক্রিস ওকসরা। পাকিস্তানকে প্রথম ধাক্কা দেন স্যাম কারেন। ১৫ রানের মাথায় মহম্মদ রিজওয়ানকে প্যাভিলিয়নে ফেরান তিনি। তিন নম্বরে নেমে আক্রমণাত্মক খেলার চেষ্টা করেন মহম্মদ হ্যারিস। কিন্তু সফল হতে পারেননি। ৮ রান করে তাঁকেও ফিরতে হয়। দু’উইকেট পড়ে যাওয়ার পরে জুটি বাঁধেন অধিনায়ক বাবর ও শান মাসুদ। চার, ছক্কা কম হলেও মেলবোর্নের বড় মাঠ কাজে লাগিয়ে দৌড়ে রান তুলছিলেন তাঁরা। ভাল দেখাচ্ছিল বাবরকে। কিন্তু ৩২ রানের মাথায় আদিল রশিদের গুগলি বুঝতে পারলেন না তিনি। বোলারের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরলেন পাক অধিনায়ক। পরের ওভারেই শূন্য রানে আউট হয়ে যান ইফতিকার আহমেদ। চাপে পড়ে পাকিস্তান। সেখান থেকে দলকে টেনে তোলেন শান মাসুদ ও শাদাব খান। বেশ কয়েকটি বড় শট খেলেন তাঁরা। এ বারের বিশ্বকাপে নিজের ধারাবাহিকতা বজায় রাখলেন শান। কিন্তু ডেথ ওভারে পর পর উইকেট হারায় পাকিস্তান। ৩৮ রানে আউট হলেন শান। শাদাব করলেন ২০ রান। বাকিরা কেউ রান পাননি। ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৩৭ রানে শেষ হয় পাকিস্তানের ইনিংস। ইংল্যান্ডের হয়ে স্যাম কারেন ও আদিল রশিদ দারুণ বল করলেন। কারেন ১২ রান দিয়ে ৩ ও রশিদ ২২ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন। শেষ দিকে ২ উইকেট তুলে নেন ক্রিস জর্ডন।
রান তাড়া করতে নেমে চেনা আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতেই ইনিংস শুরু করে ইংল্যান্ড। তবে পড়তে থাকে উইকেটও। মাত্র ১ রানে আউট হন অ্যালেক্স হেলস। নিজের প্রথম ওভারে দুর্দান্ত ইয়র্কারে তাঁকে সাজঘরে ফেরান শাহিন। অপর প্রান্তে বিধ্বংসী মেজাজে ব্যাট করছিলেন বাটলার। নাসিম শাহকে এক ওভারে চারটি চার মারেন তিনি। পাকিস্তানকে খেলায় ফেরান হ্যারিস রউফ। প্রথমে ১০ রানের মাথায় ফিলিপ সল্ট ও তার পরে ২৬ রানের মাথায় বাটলারকে আউট করেন তিনি। বাটলার আউট হলেও চাপে পড়েনি ইংল্যান্ড। বেন স্টোকস ও হ্যারি ব্রুক জুটি বাঁধেন। অহেতুক ঝুঁকি নেননি তাঁরা। পাকিস্তানের বোলাররা চেষ্টা করছিলেন এই জুটি ভাঙতে। নাসিম এক ওভারে রান কম দেন। চাপ কিছুটা বাড়ায় পরের ওভারে শাদাবকে বড় শট মারতে গিয়ে শাহিনের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ব্রুক। তিনি করেন ২০ রান। পরের ওভারে স্টোকসকে রান আউটের সুযোগ ফস্কান শাদাব। এরপর আচমকাই রানের গতি কমে যায় ইংল্যান্ডের। নাসিম, হ্যারিসদের বল ব্যাটে ছোঁয়াতে হিমশিম খাচ্ছিলেন স্টোকস। জয়ের জন্য শেষ পাঁচ ওভারে ইংল্যান্ডের দরকার ছিল ৪১ রান। বল করতে আসেন শাহিন। কয়েক ওভার আগেই ক্যাচ ধরতে গিয়ে চোট পেয়েছিলেন তিনি। এক বল করেই ব্যথা অনুভব করেন শাহিন। বেরিয়ে যান মাঠ থেকে। শাহিনের ওভার শেষ করেন ইফতিকার। শেষ দু’বলে একটি চার ও একটি ছক্কা মারেন স্টোকস। ওই দু’বলেই ম্যাচের রাশ ফের চলে আসে ইংল্যান্ডের হাতে। শেষ পর্যন্ত ৬ বল বাকি থাকতে জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে যায় ইংরেজরা। ৫২ রান করে অপরাজিত থাকেন স্টোকস। ম্যাচের সেরা নির্বাচিত হন স্যাম কারেন। পাশাপাশি টুর্নামেন্ট সেরার শিরোপাও উঠেছে তাঁরই মাথায়।