সরকারি ব্যবস্থায় ধান কেনার অগ্রগতি খতিয়ে দেখতে এবং ফড়েদের পাল্লায় না প’ড়ে কৃষকরা যাতে সরকারি ক্রয় কেন্দ্রে এসে সরাসরি বিক্রি করতে পারেন, সে জন্য কিছুদিন আগেই নবান্নে একটি উচ্চপর্যায়ের
বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই বৈঠকে নেওয়া সিদ্ধান্তগুলির দ্রুত বাস্তবায়নে এবার উদ্যোগী রাজ্য। কোনও অনিয়ম যেন না হয়। এবং ফড়েদের খপ্পরে প’ড়ে চাষিরা যেন ঠকে না যান। মূলত এই দু’টি লক্ষ্যেই আট ঘাট বেঁধে ধান কিনতে নামছে সরকার।
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মতো কৃষকদের হাতে হাতে টাকা মিটিয়ে দেওয়ার জন্য ইতিমধ্যেই ছাপানো হয়েছে চেক। শুধু তাই নয়, ধান কেনার ব্যাপারে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে সমবায় কর্মীদের। গড়া হচ্ছে টাস্ক ফোর্সও। সব রকম প্রস্তুতি শেষ করেই এ বার হাতে হাতে চেক কেটে শুরু হচ্ছে রাজ্যের তরফে ধান কেনার পালা।
শুক্রবার খাদ্য ভবনে এ প্রসঙ্গে সমবায়মন্ত্রী অরূপ রায়কে নিয়ে বৈঠক করেন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। সেই বৈঠক শেষে খাদ্যমন্ত্রী জানান, প্রায় ২০০০ ধান ক্রয় কেন্দ্র খোলা হচ্ছে। সে-ক্ষেত্রে প্রাথমিক কৃষি সমবায় সমিতিকে ব্যবহার করতে চায় দফতর। ৮ জানুয়ারি নজরুল মঞ্চে ওই সব সমিতির কর্মীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা দেওয়া হবে বলে এ দিনের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে। পাশাপাশি ধান কেনার বিষয়টি দেখাশোনার জন্য ৭ জনের একটি টাস্ক ফোর্সও গঠন করছে সমবায় দফতর। সব জেলা এবং খাদ্য দফতরের সঙ্গে সমন্বয়ের ভিত্তিতে কাজ করবে সেই টাস্ক ফোর্স।
জানা গেছে, চাষিদের ধানের দাম মিটিয়ে দেওয়ার জন্য ৫ লক্ষ চেক ছাপানোর কাজ শুরু হয়েছে। কয়েক দিনের মধ্যেই সেই কাজ শেষ হয়ে যাবে। প্রয়োজনীয় নথিপত্রের কাজকর্ম এ দিনই সাঙ্গ হয়েছে। এক-একটি জেলা প্রশাসনের তরফে সই করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে ৫ আধিকারিককে। চেক বা টাস্ক ফোর্স ছাড়াই অবশ্য ধান সংগ্রহের ধারাবাহিক কাজ চালু আছে। সেই প্রক্রিয়ায় শুক্রবার পর্যন্ত ১০ লক্ষ মেট্রিক টন ধান সংগৃহীত হয়েছে বলে জানান খাদ্যমন্ত্রী।
প্রসঙ্গত, এত দিন ধান বিক্রির টাকা সরাসরি কৃষকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পৌঁছে যেত। কিন্তু সেই টাকা সময়মতো পাওয়া যাচ্ছেন না বলে অভিযোগ এসেছিল মুখ্যমন্ত্রীর কাছে। সেই জন্যই যাবতীয় প্রস্তুতি সেরে এবার হাতে হাতে চেক দিয়েই ধান কেনার কাজ শুরু করা হচ্ছে। যাতে কোথাও টাকা পেতে সমস্যা না হয়।