আজ শুক্রবার গঙ্গাসাগরে সুন্দরবন ফুটবল কাপের পুরষ্কার প্রদান অনুষ্ঠানে মঞ্চে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুঝিয়ে দিলেন গঙ্গাসাগরের মাহাত্ম্য। বললেন, ‘গঙ্গাসাগরে আসতে মানুষকে অনেক পরিশ্রম করতে হয়। ২০ থেকে ৩০ লক্ষ মানুষকে নদী পেরিয়ে, সাগর পেরিয়ে আসতে হয়। জোয়ার-ভাটার জন্য অপেক্ষা করতে হয়। তাই তো সব তীর্থ বারবার, গঙ্গাসাগর একবার’।
অথচ এই পুণ্যতীর্থ গঙ্গাসাগরের উন্নয়ন নিয়েই কেন্দ্রের মোদী সরকার উদাসীন। বারবার বলেও লাভ হয়নি কোনও। মমতার কথায়, ‘কেন্দ্রকে আমি কতবার বলেছি, গঙ্গাসাগরের উন্নতির ব্যাপারটা একটু দেখতে। কিন্তু কেন্দ্র কুম্ভে টাকা দেয়, আমাদের দেয় না। এ রাজ্যের সঙ্গে বিমাতৃসুলভ আচরণ করা হয়। আমরা যেন ছাগলের তৃতীয় সন্তান’।
ক্ষমতায় আসার পর থেকেই গঙ্গাসাগরকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। আগে সংক্রান্তির দিন গঙ্গাসাগরের স্নান করা মানেই ছিল হোগলা পাতার ঘরে রাত্রিবাস। সেসব এখন অতীত। মমতার হাত ধরে উন্নত মানের হোটেল হয়েছে গঙ্গাসাগরে। হয়েছে পুণ্যার্থীদের থাকার পাকা জায়গা। গঙ্গাসাগরের উন্নতির জন্য আলাদা পুলিশ স্টেশন থেকে সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল, উন্নত রাস্তাঘাট গড়ে তোলা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘কেন্দ্রের সাহায্য ছাড়াও গঙ্গাসাগরের উন্নতি করতে পারে রাজ্য। কেন্দ্রকে বলেছিলাম এখানে ভোরসাগর সমুদ্র বন্দরের ছাড়পত্র দিতে। দেয়নি। একটা ব্রিজ তৈরি করে দেওয়ার জন্য আমরা আমাদের তাজপুর বন্দরের ৭৪ শতাংশ ওদের দিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তিন বছর হয়ে গেল ওরা এখানে মুড়িগঙ্গা নদির উপর ব্রিজ তৈরি করলো না। কিন্তু তারপরেও দেশের এক নম্বর তীর্থস্থান হয়ে উঠেছে গঙ্গাসাগর’। এরপরেই কেন্দ্রকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে মমতা বলেন, ‘গঙ্গাসাগর কী ছিল আর কী করেছি, সেটা এসে দেখে যান মোদী।’
রাজ্যের করা কাজের কেন্দ্র ফায়দা তুলছে অভিযোগ করে মমতা বলেন, ‘টাকা দেয় রাজ্য সরকার। কিন্তু কেন্দ্র সরকার ছবিতে মুখ দেখিয়ে সেই কৃতিত্ব দাবি করে। রাজ্য সরকারের কাজে দালালি করে কেন্দ্রীয় সরকার।’ শস্য বিমা নিয়েও তোপ দাগেন মুখ্যমন্ত্রী। সবাই যাতে কন্যাশ্রী, সবুজ-সাথীর সুবিধা পায়, সে ব্যাপারে প্রশাসনকে নজর দিতে বলেন তিনি।
