আবারও কল্লোলিনী কলকাতার মুকুটে জুড়ল এক নতুন পালক। এবার যান সহবতে দেশের ৪ মেট্রো শহরের মধ্যে প্রথম স্থান দখল করল কলকাতা। বিদেশি গাড়ি প্রস্তুতকারক সংস্থা ফোর্ডের উদ্যোগে হওয়া এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, এই শহরের গাড়িচালকরাই সবচেয়ে বেশি ট্র্যাফিক আইন মানেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে চালু হওয়া ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’ প্রচারের কল্যাণেই যে বাংলার রাজধানীর মুকুটে জুড়ল এই নতুন পালক, তা এক বাক্যে স্বীকার করছেন সকলেই।
ফোর্ড কার্টসি সার্ভে নামের এই সমীক্ষায় দেশ জুড়ে ১,৬১৩ জনের মধ্যে একটি নমুনা সমীক্ষা হয়েছে। সমীক্ষায় নিরাশ হওয়ার উপাদানই বেশি। দেখা গেছে, অনেক শিক্ষিত ব্যক্তিই বেপরোয়া গাড়ি চালান। আবার ৩৩ শতাংশ মানুষ মনে করেন, নাবালক অবস্থায় গাড়ি চালানো সঠিক। ৪৮ শতাংশ মানুষ ফুটপাথে গাড়ি পার্ক করেন। ৩২ শতাংশ মানুষ তাঁদের গাড়ি অনুমোদিত জায়গায় পার্ক করেন না। ৫১ শতাংশ মানুষ সিটবেল্টের গুরুত্ব জানেনই না। ২২ শতাংশ মানুষ স্বীকার করেছেন, তাঁরা গাড়ি চালানোর সময় মোবাইল ব্যবহার করেন। এমনকি প্রায় ১৮ শতাংশ চালক মনে করেন মদ খেয়ে গাড়ি চালানোও এমন কিছু দোষের নয়।
আবার সহানুভূতির অভাবও প্রকট ভারতীয় ড্রাইভারদের মধ্যে। ৪১ শতাংশ চালক দুর্ঘটনায় জখমদের হাসপাতালে নিয়ে যান না। ৩৭ শতাংশ সড়ক ব্যবহারকারী নিজেদের বা অন্যদের সুরক্ষা সম্পর্কে সম্পূর্ণ উদাসীন থাকেন। ৪০ শতাংশ মানুষ জানিয়েছেন, প্রবীণ নাগরিকদের তাঁরা রাস্তা পেরতে সাহায্য করবেন না। ৪৮ শতাংশ মানুষ জানিয়েছেন, তাঁরা দৃষ্টিহীনদের জন্যও অপেক্ষা করবেন না। প্রতি পাঁচ জনের দু’জন জানিয়েছেন, রাস্তায় কোনও প্রয়োজনে তাঁরা সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসবেন না।
তবে আশার আলোও দেখিয়েছে বাংলার রাজধানীই। জানা গেছে, এখানের ১৮-৩৪ বছর বয়সি চালকরা অনেক বেশি সমাজ সচেতন এবং সহমর্মী। মহানগরের রাস্তায় সন্তান-সহ গাড়ি চালানোর সময় চালকরা অনেক বেশি সচেতন থাকেন। এক্ষেত্রে মমতার ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’ উদ্যোগ যে যথেষ্ট সফল এবং কার্যকরী হয়েছে, তার প্রমাণ এই সমীক্ষার রিপোর্ট।