রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের মতো অত্যাধুনিক পরিষেবা মিলবে এবার সমবায় ব্যাঙ্কেই। সমবায় মন্ত্রকের উদ্যোগে যাবতীয় পরিষেবা পৌঁছে যাবে রাজ্যের প্রত্যন্ত গ্রামগুলিতেও। ইন্টারনেট, এসএমএস এবং এটিএম-সহ সমস্ত আধুনিক পরিষেবাই সারা বাংলার মানুষ পাবেন। বৃহস্পতিবার পূর্ব বর্ধমানের টাউন হলে সমবায় নিয়ে এক আলোচনা সভায় এমনই জানালেন রাজ্যের সমবায়মন্ত্রী অরূপ রায়।
বর্ধমান জেলা সমবায় ইউনিয়ন রেঞ্জ ১-এর আয়োজিত ওই আলোচনা সভার উদ্বোধন করেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি শম্পা ধাড়া। আলোচনার বিষয় ছিল ‘সমবায় মাধ্যমে উন্নত প্রযুক্তি ও ডিজিটালাইজেশন দ্বারা আর্থিক অন্তর্ভুক্তিকরণ’। সভায় সমবায়মন্ত্রী বলেন, ‘গ্রামের মানুষ আর বলতে পারবেন না তাঁরা সমবায়ের পরিষেবা থেকে বঞ্চিত। মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে যাবে পরিষেবা। এই রকম একটা পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এজন্য রাজ্যের ২৬৩১টি সমবায় সমিতিকে আমরা বেছে নিয়েছি। গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্র অর্থাৎ কাস্টমার সার্ভিস পয়েন্টের (সিএসপি) মাধ্যমে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের সুবিধাগুলি মানুষের কাছে পৌঁছে যাবে।’
মন্ত্রী আরও বলেন যে, ‘আরটিজিএস, নেট পরিষেবা, এসএমএস এলার্ট, এটিএম-সহ সমস্ত আধুনিক পরিষেবাই থাকবে। গোটা বাংলা জুড়ে প্রতিটা গ্রামের মানুষই তা পাবেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে গ্রামীণ অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী করার জন্যই রাজ্যের তরফে এই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।’
মন্ত্রী জানান, আমাদের রাজ্যে প্রায় ৩৩ হাজারেরও বেশি সমবায় আছে। এমন কোনও সরকারি বিভাগ নেই যেখানে সমবায় নেই। আবার, সমবায়ের অধীনে প্রায় ২ লক্ষ ৩ হাজার স্বনির্ভর গোষ্ঠীও আছে। যাদের সদস্য সংখ্যা প্রায় ৩০ লক্ষের কাছাকাছি। পাশাপাশি রাজ্যে এখন সমবায় ব্যবস্থার মাধ্যমে খাদ্যসাথীর ধানও কেনা হয়। ৮০ শতাংশ ধান সমবায় সমিতিগুলোই কেনে। বাংলায় আমরা কিসান ক্রেডিট কার্ডও দিয়ে থাকি। এবছর আমরা সাড়ে ১০ লক্ষের বেশি কার্ড দিয়েছি। তার আগেই ২৩ লক্ষ কিসান ক্রেডিট কার্ড দেওয়া হয়েছে। তাঁর কথায়, ‘গ্রামের কৃষকের আয় গত সাড়ে সাত বছরে প্রায় ৩ গুণ বেড়েছে। আমরা চাই, তা আরও বাড়ুক।’
এরপরই বাম আমলের সমবায়গুলির অব্যবস্থার কথা তুলে ধরেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, ‘অতীতে দুর্নীতি ও স্বজন পোষণের কারণে বহু সমবায় সমিতি বন্ধ হয়ে গেছে। সেগুলিতে আর কোনও কাজ হচ্ছে না। আমরা সেই সমিতিগুলিকে ফিরিয়ে আনার জন্য নানান পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি।’