গতকাল গোটা দেশ জুড়ে পালিত হয়েছে স্বাধীনতা দিবস। এই বিশেষ দিনগুলি দেশের জাতীয় পতাকা নিয়ে মাতামাতি করেন সকলেই। কিন্তু দিন ফুরালেই দেখা যায় নিজেদের দেশের জাতীয় পতাকা মাটিতে গড়াগড়ি খাচ্ছে বা এখানে ওখানে পড়ে রয়েছে । যা বড়ই দৃষ্টিকটু লাগে। একাধিকবার সতর্ক করেও বিশেষ লাভ হয়নি। এই সমস্ত কিছুর মধ্যেই সামনে এসেছেন এক ব্যক্তি। যিনি এই অবহেলিত জাতীয় পতাকা সংগ্রহ করে রেখেছেন যতটা পেরেছেন। তাঁর কাছে কত পরিমাণ তেরঙ্গা রয়েছে তা শুনলে অবাক হবেন অনেকেই। বিভিন্ন ক্লাব সংগঠনের পক্ষ থেকে পাড়ায় পাড়ায় বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। শিকলি করে সাজানো হয় ছোট ছোট কাগজের বা প্লাস্টিকের পতাকা। সেই পতাকাই পরের দিন ওয়ায় উড়ে গিয়ে বা ছিঁড়ে গিয়ে রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। অনেকেই রয়েছেন যারা জাতীয় পতাকা মাটিতে পড়ে থাকতে দেখলেও না দেখার ভান করে এড়িয়ে যান। কিন্তু মনোরঞ্জন সরকার নামের বালির নিশ্চিন্দার এক প্রতিবন্ধী যুবক জাতীয় পতাকা সংগ্রহ করে এক নজির গড়েছেন। যেকোনো জায়গাতে ছিঁড়ে পড়ে থাকা জাতীয় পতাকা দেখলেই তিনি সেগুলি সংগ্রহ করতে শুরু করেছেন।
এই পথাচলা তিনি শুরু করেছিলেন ২০০৮ সাল থেকে। তখন থেকেই রাস্তাঘাটে, নর্দমায় বা যত্রতত্র পড়ে থাকা পতাকা কুড়িয়ে প্রায় ৬০ হাজারটি তেরঙ্গা নিজের কাছে সংগ্রহ করে রেখেছেন। প্রথমে তাঁকে সকলে পাগল বলে খেপালেও গত ১৪ বছর ধরে এই কাজ করে এসে আজ তিনিই এখন সর্বত্র “ফ্ল্যাগ ম্যান” হিসেবে পরিচিত। জানা গিয়েছে গত ১৪ বছর ধরে বাড়ির টিনের বাক্সে কুড়িয়ে সংগ্রহ করা দেশের জাতীয় পতাকা রেখেছেন ৬০ হাজারের বেশি। তিনি ‘মায়ের প্রেরণা’ সংস্থার মাধ্যমে প্রতিবছর এই পড়ে থাকা অবহেলিত জাতীয় পতাকা রাস্তা থেকে সযত্নে তোলার কাজ করে থাকেন। দেশের জাতীয় পতাকার সম্মান রক্ষার এই কাজে মনোরঞ্জন সরকারকে সাহায্য করেন বালিরই একদল যুবক। মনোরঞ্জনের কথায় তাঁরা, বিভিন্ন জায়গায় পড়ে থাকা জাতীয় পতাকা কুড়িয়ে সংগ্রহের মাধ্যমে ভারত মায়ের সম্মান ফিরিয়ে দেওয়ার ছোট্ট প্রয়াস নিয়েছেন। এই খবর সামনে আসার পরেই অনেকেই এই কাজের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন।
