স্বাধীনতার হীরক জয়ন্তী বর্ষে পালিত হচ্ছে ‘আজাদি কা অমৃত মহোৎসব’। তাই সোশ্যাল মিডিয়ার ডিসপ্লে পিকচারে ত্রিবর্ণরঞ্জিত পতাকার ছবি দেওয়ার পাশাপাশি সকলকে নিজেদের বাড়িতে তেরঙ্গা ওড়ানোর আর্জি জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বিজেপির এউ তেরঙ্গা ঝান্ডা প্রীতি নিয়েই এবার প্রশ্ন তুললেন তৃণমূল সাংসদ জহর সরকার। তাঁর বক্তব্য, যে আরএসএস দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশ নেয়নি, তার ভাবাদর্শে গড়ে ওঠা বিজেপির কেন আচমকা দেশপ্রেমী হয়ে উঠল, তা বোঝা যাচ্ছে না। যে আরএসএস অতীতে তেরঙ্গা ঝান্ডা সম্পর্কে আপত্তি করেছিল, তার উত্তরসূরী বিজেপি রাতারাতি তার ভক্ত হয়ে উঠল।
প্রসঙ্গত, জহর সরকার এক সময় প্রসার ভারতীর সিইও ছিলেন। ২০১৮ সালের ২৯ জানুয়ারী তাঁর একটি প্রবন্ধ প্রকাশিত হয় এক পোর্টালে। পরবর্তীকালে তিনি তৃণমূলে যোগ দেন। ওই পোর্টাল কর্তৃপক্ষ গত ৪ অগস্ট জহরবাবুর প্রবন্ধটি ফের প্রকাশ করে। তাতেই তিনি বিজেপির দেশপ্রেম নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। ২০১৬ সালে সু্প্রিম কোর্টের বিচারপতি দীপক মিশ্রের ডিভিশন বেঞ্চ এক রায়ে বলে, এবার থেকে দেশের সব সিনেমা হলে শো শুরু হওয়ার আগে জাতীয় সঙ্গীত প্রচার করা বাধ্যতামূলক। শুধু তাই নয়, জাতীয় সঙ্গীত চলাকালে দর্শকদের উঠে দাঁড়াতে হবে। পরে এই রায় নিয়ে বিচারপতিদের মধ্যে মতভেদও দেখা দেয়। জহরবাবু সেই প্রসঙ্গও তুলে ধরেছেন। এর আগেও সিনেমা হলে জাতীয় সঙ্গীত প্রচার হত। কিন্তু ১৯৭১ সালের পর সেই নিয়ম উঠে যায়।
তৃণমূল সাংসদ লিখেছেন, ১৯৪৭ সালের অগস্ট মাসে আরএসএসের মুখপত্র অর্গানাইজার ঘোষণা করে, ভারতের তেরঙ্গা জাতীয় পতাকা কখনই হিন্দুরা মেনে নিতে পারে না। হিন্দুরা তার প্রতি যথাযথ সম্মানও জানাতে পারে না। কারণ এই তিন শব্দটিই অশুভ। এবং তিন রঙে শোভিত জাতীয় পতাকা একটি বাজে মানসিকতার জন্ম দেয়। তা দেশের পক্ষে খুব ক্ষতিকর। এই প্রসঙ্গেই তিনি প্রয়াত সরসঙ্ঘ চালক এম এস গোলওয়ালকরের লেখা বাঞ্চ অফ থটস বইয়ের কথাও উল্লেখ করেছেন। তাতে গোলওয়ালকর লিখেছিলেন, আমাদের নেতারা একটি নতুন পতাকা তৈরি করেছেন। জহরের মতে, আরএসএস বরাবর গেরুয়া ধ্বজার পক্ষে। তিনি বলেন, আজ কেন আচমকা আএসএস মতাদর্শে বিশ্বাসী বিজেপির দেশপ্রেম জেগে উঠল।