সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। ইতিমধ্যেই তা নিয়ে আগাম প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে বাংলার শাসকদল তৃণমূল। প্রত্যেকটি জেলা ধরে ধরে বৈঠক সারছেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার নির্বাচনের টিকিট আরও সতর্ক হচ্ছে জোড়াফুল শিবির। অভিষেক সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, চলবে না স্বজনপোষণ। এবার থেকে নিজের লোক বলে আর যাকে তাকে পঞ্চায়েতে নির্বাচনের টিকিট দেওয়া যাবে না। স্বচ্ছ ভাবমূর্তি রয়েছে, সহজ-সরল জীবন যাপন করেন এবং মানুষের পাশে দাঁড়ান এমন দলীয় কর্মীরাই ভোটের টিকিট পাবেন বলেই জানা যাচ্ছে। সূত্র অনুযায়ী, জেলায় জেলায় এমন কর্মীদের নামের তালিকা চাওয়া হয়েছে। সেই তালিকা যাচাই করেই পঞ্চায়েতের প্রার্থীদের নাম চূড়ান্ত করবে তৃণমূল। জঙ্গিপুর, বহরমপুর ও মুর্শিদাবাদ সাংগঠনিক জেলার নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকে বসে এমনটাই জানিয়েছে সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। মালদহ ও দুই দিনাজপুরের নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক সেরে মুর্শিদাবাদের তিন সাংগঠনিক জেলা নিয়ে বসেছিলেন ডায়মন্ডহারবারের সাংসদ। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন তিন সাংগঠনিক জেলার সব সাংসদ, বিধায়ক, যুব তৃণমূল এবং আইএনটিটিইউসি সভাপতি প্রত্যেকেই।
পাশাপাশি, উত্তর বাংলার জেলাগুলির সঙ্গে বৈঠকেও সংশ্লিষ্ট জেলা নেতৃত্বকে পঞ্চায়েত ভোটের জন্যে স্বচ্ছ ভাবমূর্তির মানুষদের কথাই বলা হয়েছিল। এর পাশাপাশি, রাজ্যের সমস্ত প্রকল্প, সামগ্রিক পরিষেবা মানুষের কাছে পৌঁছচ্ছে কিনা, জনপ্রতিনিধিরা আদৌ সাধারণ মানুষের পাশে থাকছেন তো, ইত্যাদিও নজরে রাখতে বলা হয়েছে। বিভিন্ন ব্লক নিয়ে খুঁটিনাটি খোঁজ-খবর নিয়েছেন অভিষেক, তেমনটাই খবর। ক্যামাক স্ট্রিটের অফিসে হওয়া এই বৈঠকে, জঙ্গিপুর, বহরমপুর ও মুর্শিদাবাদ জেলার ব্লক কমিটির বিষয়ও আলোচনা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। সূত্রের খবর, বৈঠকে মুর্শিদাবাদের ২৬টি ব্লকের সভাপতি ও শাখা সংগঠনের পদাধিকারীদের নাম উঠে এসেছে। রাজ্য সভাপতি সাংসদ সুব্রত বক্সিসহ দুই মন্ত্রী সুব্রত সাহা, আখরুজ্জামান, সাংসদ খলিলুর রহমান, সাংসদ আবু তাহের এবং বিধায়ক শাওনি সিংহ রায় বৈঠকে হাজির ছিলেন। মালদহ ও দুই দিনাজপুরের নেতৃত্বের উদ্দেশ্যে বুথে বুথে মুখ্যমন্ত্রীর প্রকল্প ও নানা সরকারি পরিষেবার কথা বলার নিদান দিয়েছিলেন অভিষেক। স্বচ্ছ ভাবমূর্তির কর্মীদের দায়িত্বে নিয়ে আসার পাশাপাশি, নিজের লোক বলে কাউকে বুথের দায়িত্ব না দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন অভিষেক। মুর্শিদাবাদের ক্ষেত্রেও তাই বলা হয়েছে। তিন সাংগঠনিক জেলার নেতা-নেত্রীদের পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রস্তুতিতে এখন থেকেই মাঠে নামতে বলছেন অভিষেক সাধারণ মানুষের স্বার্থে সকলকে নিয়ে রাজনীতি করতে হবে। ক্ষমতা জাহির করে নয়, মানুষের কাছে মাথা নীচু করে বিনীতভাবে যেতে হবে, দলীয় নেতা ও কর্মীদের উদ্দেশ্যে এমনই বার্তা দিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক।