বাংলার সিনিয়র ক্রিকেট দলের কোচ হিসাবে দায়িত্ব নিলেন লক্ষ্মীরতন শুক্ল। মঙ্গলবার সিএবি-তে সেই ঘোষণার পরই নতুন কোচকে শুভেচ্ছা জানালেন প্রাক্তন কোচ অরুণ লাল। দীর্ঘ দিনের সতীর্থ মনোজ তিওয়ারি এ বার খেলবেন লক্ষ্মীর প্রশিক্ষণে। দীর্ঘ দিন ধরেই বাংলার কোচ কে হবেন সেই নিয়ে আলোচনা চলছিল। সোমবারও সিএবি-তে দীর্ঘ ক্ষণ বৈঠক হয় বাংলার কোচ নির্বাচন নিয়ে। একাধিক নাম নিয়ে আলোচনার পর বাংলার ভূমিপুত্র লক্ষ্মীকেই কোচ করার সিদ্ধান্ত নেয় সিএবি। এবার বাংলার প্রস্তুতিও শুরু হচ্ছে অগস্টের প্রথম সপ্তাহে। লক্ষ্মী জানিয়ে দিয়েছেন, প্রত্যেক ক্রিকেটারকে একই নিয়ম মেনে চলতে হবে। বাংলা দলের কোচ হওয়ার পরেই লক্ষ্মীরতন শুক্লর ঘোষণা, সেনাবাহিনীর ট্রেনিং করাবেন ক্রিকেটারদের। ফোর্ট উইলিয়ামেই অভিমন্যু ঈশ্বরনদের নিয়ে একটি শিবির আয়োজন করার ভাবনা-চিন্তা রয়েছে তাঁর। তবে সেখান থেকে অনুমতি নিতে হবে আগে। এর আগে অনূর্ধ্ব পঁচিশের কোচ হিসেবেও সেনাবাহিনীর ট্রেনিং করিয়েছেন লক্ষ্মী। এ বার তা নিয়ে আসতে চান সিনিয়র দলেও। বাংলার প্রস্তুতিও শুরু হচ্ছে অগস্টের প্রথম সপ্তাহে।
লক্ষ্মী জানিয়ে দিয়েছেন, প্রত্যেক ক্রিকেটারকে একই নিয়ম মেনে চলতে হবে। সিনিয়র বলেই কেউ অতিরিক্ত সুবিধে পাবেন না। প্রাক-মরসুম প্রস্তুতিতেও থাকতে হবে সকলকে। মঙ্গলবার বিকেলেই সিএবি-তে প্রবেশ করেন বাংলার নতুন কোচ। এবং শুরুতেই যেন পরিবার গড়তে নেমে পড়লেন। সকলের সঙ্গে সম্মান দিয়ে কথা বলা থেকে পরিবারের সদস্যদের খবর নেওয়া। শারীরিক কোনও সমস্যা হচ্ছে কি না, সেই খোঁজ নিতেও দেখা গেল তাঁকে। সাংবাদিক বৈঠক শেষে লক্ষ্মী বলছিলেন, ‘‘বর্তমান ক্রিকেটারদের মধ্যে অনেকের সঙ্গেই খেলেছি। প্রত্যেকের মধ্যেই বড় ক্রিকেটার হওয়ার ক্ষমতা আছে। কোন জায়গায় তারা পিছিয়ে পড়ছে, সেটা খুঁজে বার করার দায়িত্ব আমার।’’ যোগ করেন, ‘‘ফিটনেসের দিক থেকে কোনও আপস করা হবে না। ভাবছি ক্রিকেটারদের সেনাবাহিনীর ট্রেনিং দেব। ফোর্ট উইলিয়ামে ওদের একটি শিবির আয়োজন করার চেষ্টা করা হবে। তাদের থেকে অনুমতি নিতে হবে দ্রুত।’’ সেনাবাহিনীর ট্রেনিংয়ের সাহায্যে বর্তমান ক্রিকেটারদের মধ্যে লড়াকু মানসিকতা তৈরি করার উদ্দেশ্য তাঁর। সহকারী হিসেবে পাচ্ছেন সৌরাশিস লাহিড়়ীকে। বোলিং কোচ সম্ভবত শিবশঙ্কর পাল। কোচিং দল গড়ে তুলতে সিএবি কর্তারা জোর দিচ্ছেন তারুণ্যের উপর।
লক্ষ্মী বাংলার প্রাক্তন কোচদের সকলকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। এমনকি বাংলার বয়সভিত্তিক স্তরেও যাঁরা প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন, তাঁদেরও যে প্রয়োজন হতে পারে, অস্বীকার করছেন না। ডব্লিউভি রামন কোচ থাকাকালীন বাংলাকে নেতৃত্ব দিয়েছেন লক্ষ্মী। শেষ ট্রফিও এসেছে রামনের কোচিংয়েই। তাঁর সঙ্গে আরও এক বার কাজ করার সুযোগ পেয়ে লক্ষ্মী আপ্লুত। বলছিলেন, ‘‘এত দিন বাংলা দলকে যাঁরা কোচিং করিয়েছেন, প্রত্যেকেই নতুন কিছু শিখিয়েছেন। এখনও আমাদের বয়সভিত্তিক স্তরে যাঁরা কোচ হিসেবে রয়েছেন, তাঁদের সাহায্য প্রয়োজন হবে। আমরা একই সুতোয় বাঁধা। এখন যারা বয়সভিত্তিক ক্রিকেট খেলছে, তাদের মধ্যে থেকেই আগামী দিনে অনেকে বাংলার হয়ে খেলবে। সকলকে একসঙ্গে নিয়ে চলতে হবে।’’ দায়িত্ব পেয়েই সকলকে ঐক্যবদ্ধ করার বার্তা দিয়ে গেলেন বাংলার বর্তমান কোচ। সেই সঙ্গেই বলেন, ‘‘রামনের সঙ্গে কাজ করার জন্য আমিও মুখিয়ে রয়েছি। তবে বাংলার প্রত্যেক বিভাগের কোচকেই আমার প্রয়োজন হবে।’’ বাংলার কোচ হওয়ার পরে তাঁর বার্তা, ‘‘সকলের জন্য সমান নিয়ম। সিনিয়র-জুনিয়র বিভেদ থাকবে না দলে।’’