সাম্প্রতিক কালে একাধিক রাজ্যের নির্বাচনে আঞ্চলিক দলের সঙ্গে জোট করেও ড্যামেজ কন্ট্রোল করা যায়নি। যার ফলে ভোটে হার তো হয়েছেই। পাশাপাশি হাতছাড়া হয়েছে একাধিক রাজ্যের কুর্সি। তাই সেসব তিক্ত অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে আগে প্রদেশ নেতাদের গোষ্ঠীকোন্দল মেটানোর পাশাপাশি ইতিবাচক রাজ্যে সংগঠনে ব্যাপক রদবদলের সিদ্ধান্ত নিল কংগ্রেস হাইকম্যান্ড। সিদ্ধান্ত মোতাবেক প্রতিদিনই কোনও না কোনও রাজ্যে নেতৃত্ব বদলের সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী। এর মধ্যে অন্যতম কর্ণাটক। রয়েছে গুজরাত ও ত্রিপুরাও।
প্রসঙ্গত, কর্ণাটক, মধ্যপ্রদেশ, শেষে মহারাষ্ট্র। এককভাবে হোক বা জোট। কোনও সরকারই মেয়াদ শেষ করতে পারেনি। হাতছাড়া হয়েছে কংগ্রেসের। বিধায়কদের দলবদল করিয়ে সরকার ছিনিয়ে নিতে সফল হয়েছে গেরুয়া শিবির। কারণ একাধিক। প্রথমত, রাজ্যে রাজ্যে কংগ্রেসের অভ্যন্তরীণ গোষ্ঠীকোন্দল। দ্বিতীয়ত, জোট করে সরকারে থাকা রাজ্যে আঞ্চলিক দলের সঙ্গে মতপার্থক্য ডুবিয়েছে কংগ্রেসকে। ফসল ঘরে তুলেছে বিজেপি। অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার তাই প্রথম থেকেই সতর্ক হয়ে পদক্ষেপ করার সিদ্ধান্ত হাইকম্যান্ডের।
চলতি বছরের শেষে বা আগামী বছরের প্রথমে যে’কটি রাজ্যে ভোট আছে, সেই রাজ্যগুলিতে সংগঠনকে মজবুত করতে মরিয়া সোনিয়া, রাহুলরা। যেমন কর্ণাটকে গোষ্ঠীকোন্দল মেটাতে রাজ্যের দুই হেভিওয়েট নেতা প্রদেশ সভাপতি ডিকে শিবকুমার ও প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়ার সঙ্গে দফায় বৈঠক করেন রাহুল ও প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। দিল্লীতে একটি বৈঠকে সোনিয়া নিজেই হাজির থেকে কোন্দল মেটাতে উদ্যোগী হন। দু’পক্ষকে সন্তুষ্ট করতে প্রদেশের সংগঠনেও ব্যাপক রদবদল করা হচ্ছে।
আবার পাঁচজন এআইসিসি সম্পাদককে কর্ণাটকে বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার কর্ণাটকে দলের আর্থিক দায়িত্বে নতুন দু’জনকে এনেছেন সোনিয়া। কয়েকদিন আগেই রাজ্যে তৈরি করা হয়েছে ‘ওয়ার রুম’। দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে শশীকান্ত সেনথিলকে। বিধানসভা ভোটের চিন্তাভাবনা করে প্রতিদিনকার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড দেখাশোনার জন্য গঠন করা হয়েছে একটি পৃথক কমিটি। শুধু কর্ণাটক নয়। গুজরাতেও দলে রদবদলের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সোনিয়া। পাটিদার নেতা হার্দিক প্যাটেল বিজেপিতে যোগদান করায় পাটিদার সম্প্রদায়ের অন্যান্য নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্ঠা চলছে।
আবার, ৭ জুলাই গুজরাত প্রদেশ কংগ্রেসে পাঁচ বিধায়ক-সহ সাতজনকে কার্যকরী সভাপতি নিয়োগ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছেন জিগনেশ মেবানিও। রয়েছেন পাটিদার সম্প্রদায়ের বিধায়ক হেমন্ত প্যাটেল। একই চিত্র ত্রিপুরাতেও। আগামী বছর সেখানে বিধানসভার ভোট। তার আগেই রাজ্যের প্রায় সব জেলার সভাপতি পদে রদবদল করেছে এআইসিসি। কেবলমাত্র এই তিন রাজ্য নয়। গোটা দেশেই নতুন নেতৃত্ব সামনে আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় চিন্তন শিবিরে।