এ যেন মগের মুলুক! এবার যোগী রাজ্যের লখনউতে গায়েব ১৪০ বছরের পুরনো স্কুল! হ্যাঁ, গরমের ছুটির পর, শিক্ষক-শিক্ষিকা থেকে ছাত্রছাত্রীরা স্কুলে ফিরে এসে দেখলেন, তাঁদের স্কুলটাই আর নেই। ঐতিহাসিক বিদ্যালয়টির জায়গায় রয়েছে একটি নব নির্মিত বেসরকারি স্কুল। এই পরিস্থিতিতে স্কুলের বাইরের রাস্তাতেই ক্লাস নেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। জানা গিয়েছে, একদল শিক্ষা মাফিয়া এবং শিক্ষা বিভাগের দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তাদের কলকাঠতেই রাতারাতি নিখোঁজ হয়ে গেল ১৪০ বছরের পুরনো স্কুলটি।
ঘটনাটি লখনউয়ের গোলাগঞ্জ এলাকার। সেখানে অবস্থিত ওই স্কুলটির রাজ্য সরকারের সাহায্যপ্রাপ্ত এবং দশম শ্রেণি পর্যন্ত উত্তরপ্রদেশ বোর্ডের স্বীকৃতিও ছিল। বৃহস্পতিবার (৭ জুলাই) গরমের ছুটির পর স্কুলের পঠনপাঠন শুরু হওয়ার কথা থাকলেও ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষক-শিক্ষিকারা এসে দেখেন, তাঁদের স্কুলটি আর নেই। বদলে একই ভবনে চলছে আরেকটি বেসরকারি স্কুল। নাম, মেথডিস্ট চার্চ স্কুল। তাঁদের জানিয়ে দেওয়া হয়, এই ভবনে এখন থেকে নতুন স্কুলই হবে। শিক্ষা দফতর থেকে তাদের ওই ভবনে ক্লাস এইট পর্যন্ত স্কুল চালানোর অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এরপর বাধ্য হয়ে ওই ভনের সামনের রাস্তাতেই ছাত্র-ছাত্রীদের ক্লাস নিতে শুরু করেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা।
এরপরই বিষয়টি নিয়ে এলাকায় প্রবল হইচই শুরু হয়। বিষয়টি জেলাশাসক সূর্যপাল গাঙ্গওয়ারের নজরেও আসে। এরপরই নতুন বেসরকারি বিদ্যালয়টির স্বীকৃতি নিয়ে তদন্ত শুরু হয়। জেলাশাসক জানিয়েছেন, নতুন স্কুলের স্বীকৃতি পাওয়া নিয়ে অনেক অসঙ্গতি পাওয়া গিয়েছে। স্কুলটিকে সম্পূর্ণ অবৈধভাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। ওই ভবনটি সেন্টেনিয়াল স্কুলের নামে স্বীকৃত হওয়া সত্ত্বেও, কিছু শিক্ষা মাফিয়া একই ভবনে অন্য নামে বিদ্যালয় তালানোর জন্য স্বীকৃতির আবেদন করেছিল। শিক্ষা বিভাগের কিছু দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তা সেই স্বীকৃতির অনুমোদনও দিয়েছেন। এতেই এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
শুক্রবারই (৮ জুলাই) ওই বিদ্যালয় পরিদর্শনে আসেন জেলাশাসক। তারপরেই নতুন বেসরকারি স্কুল, মেথডিস্ট চার্চের বোর্ডও সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। জেলাশাসক নতুন স্কুলেটির কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে এফআইআর নথিভুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, তদন্ত শেষে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এদিকে, বিষয়টি জানাজানি হতেই মহা বিড়ম্বনায় পড়েছেন শিক্ষা দফতরের আধিকারিকরা। মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি এই বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে। মেথোডিস্ট চার্চ স্কুলকে ভুয়া স্বীকৃতি যারা দিয়েছে, ওই প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা গ্রহণ করে স্কুলটির স্বীকৃতি অবিলম্বে বাতিলের দাবিও জানানো হয়েছে।