হিন্দু দেবতাদের নামে দোকান চালাতে হবে। আর, বয়কট করতে হবে মুসলিম বিক্রেতাদের পণ্য। রবিবার এমনই নিদান দিন হরিয়ানা মানেসারের এক পঞ্চায়েত। স্থানীয় বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ও বজরং দলের প্রায় ২০০ জন সদস্য সভায় যোগ দিয়েছিলেন। এক মন্দিরে চলল সভার কাজকর্ম। সেখান থেকেই পঞ্চায়েতের কর্তারা তাদের সিদ্ধান্ত কার্যকর করার জন্য প্রশাসনকে চূড়ান্ত সময়সীমা বেঁধে দেন। একইসঙ্গে, সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে গ্রামভিত্তিক কমিটিও তৈরি করে দেওয়ার কথা এই পঞ্চায়েত ঘোষণা করল।
মানেসর ছাড়াও ধারুহেরা ও গুরগাঁও থেকেও বাসিন্দারা পঞ্চায়েতের সভায় যোগ দিয়েছিলেন। সভা শেষে পঞ্চায়েতের সদস্যরা ডিউটিরত ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে একটি স্মারকলিপি জমা দেন। সেই স্মারকলিপিতে বেআইনি পরিযায়ী ব্যক্তিদের এলাকা থেকে উৎখাতের দাবিও জানিয়েছেন মানেসারের এই পঞ্চায়েত সদস্যরা। স্মারকলিপিতে তাঁরা লিখেছেন, ‘শীঘ্রই তদন্ত করা হোক। তদন্তে যদি দেখা যায় কেউ বেআইনিভাবে থাকছেন, তাকে উৎখাত করা হোক। কারণ, ষড়যন্ত্র করে এরা ধর্ম পরিবর্তন ঘটাচ্ছে। তাই এই ধরনের ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।’
পঞ্চায়েতের এই সভার ব্যাপারে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের মানসারের সাধারণ সম্পাদক দেবেন্দর সিং বলেন, ‘দেশে ধর্মীয় মৌলবাদ ও জিহাদি শক্তি ক্রমশ ঘাঁটি গাড়ছে। আমরা পঞ্চায়েতকে এই অঞ্চলের হিন্দু সমাজের স্বার্থে সরব হতে বলেছিলাম। কারণ, হিন্দুরা খুন হচ্ছে। বহু রোহিঙ্গা, বাংলাদেশি এমনকী পাকিস্তানিরাও বেআইনিভাবে গুরগাঁও ও মানেসারে লুকিয়ে আছে। এখানে নিজেদের পরিচয় লুকিয়ে বাস করছে। তারা এখানে বিভিন্নরকম ব্যবসাও করছে। যারা বেআইনিভাবে লুকিয়ে আছে, তাদের খুঁজে বের করার জন্য আমরা প্রশাসনকে একসপ্তাহ সময় দিচ্ছি। তারা কোনও কাজ না-করলে হিন্দু সমাজ ব্যবস্থা নেবে। মহাপঞ্চায়েত ডাকা হবে। সেখানেই পরবর্তী পদক্ষেপের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
বৈঠকে বক্তাদের একাংশ মুসলিম বিক্রেতাদের বয়কটের ডাক দেন। অভিযোগ ওঠে, মানেসারে হিন্দু দেবতাদের নামে বহু দোকান চলে। কিন্তু, সেই সব দোকান চালায় মুসলিমরা। এটা একটা বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের অঙ্গ বলেই অভিযোগ করেন বৈঠকে উপস্থিত অনেকেই। আর, সেই কারণেই মুসলিম বিক্রেতাদেরকে আর্থিক বয়কট করাই একমাত্র সমাধান বলে দাবি করেন বিশ্ব হিন্দু পরিষদ নেতৃত্ব।
