সামনেই রাষ্ট্রপতি নির্বাচন। এনডিএ-র রাষ্ট্রপতি প্রার্থী দ্রৌপদী মুর্মু সম্বন্ধে ক’দিন আগেই মুখ খুলেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ইসকনের রথের অনুষ্ঠানে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলতে শোনা গিয়েছে, “মহিলা প্রার্থী হলে আমি সবসময় রাজি। বিজেপি যদি আগে থেকে জানাত একজন আদিবাসী মহিলাকে প্রার্থী করছে, তাহলে আমরাও বিরোধী ১৬-১৭ টি দল মিলে চেষ্টা করতাম। বৃহত্তর স্বার্থে একটা সিদ্ধান্ত নিতে পারতাম। তাহলে দেশের পক্ষে ভাল হত। একসময় এপিজে আবদুল কালামও হয়েছেন।” এদিকে তাঁর এই বক্তব্যকে একযোগে ঢাল করেছে বাম-কংগ্রেস। তাদের মতে, বিজেপির সঙ্গে তৃণমূলের আড়ালে আবডালে যে আঁতাত রয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যে তা স্পষ্ট। যদিও তৃণমূল সেসবে একেবারেই পাত্তা দিচ্ছে না তৃণমূল। বরং তৃণমূল নেতাদের আত্মবিশ্বাসের সুরে জানাচ্ছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই বিরোধীদের মুখ। বিজেপি, সিপিএম আর কংগ্রেস – একযোগে বিরোধীদের বিঁধতে ২১ জুলাইয়ের প্রস্তুতি মঞ্চগুলিকেই ঢাল করছে ঘাসফুল শিবির। তৃণমূল সূত্রে খবর, একুশের জুলাইয়ের জন্য যেসব সভা হবে, সেখানে তৃণমূল নেতা, কর্মীরা কী বক্তব্য রাখবেন তার একটি খসড়া তৈরি করে দিয়েছে দল।
পাশাপাশি, তৃণমূল সূত্রে খবর, এই প্রস্তুতি সভাগুলিতে যাঁরা বক্তব্য রাখবেন, তাঁদের তুলে ধরতে বলা হয়েছে, “দেশে বিকল্প শক্তির ঐক্যবদ্ধ মঞ্চের ভরকেন্দ্র তৃণমূলই। নরেন্দ্র মোদীর বিকল্প মুখ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।” সম্প্রতি যে সমস্ত বিষয় নিয়ে কেন্দ্রকে অস্বস্তিতে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে, সেই সমস্ত ইস্যুকে ২১শে জুলাইয়ের প্রস্তুতি সভার বক্তব্যে তুলে ধরবেন নেতারা। ‘অগ্নিপথ প্রকল্প’ থেকে কৃষি আইন, ধর্মীয় বিভিন্ন ইস্যু সবই থাকবে বক্তব্যে। একইসঙ্গে বঙ্গ বিজেপির জন বিচ্ছিন্নতা, দলবদলের রাজনীতি, গোষ্ঠীকোন্দল, দলের ভিতরই বারবার বিরোধিতার সুর চড়ানো সবকিছুই তুলে ধরতে বলা হয়েছে তৃণমূল নেতাদের। এর আগে একাধিকবার তৃণমূল দাবি করেছে, এ রাজ্যে কংগ্রস ও সিপিএম কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলিকে সুবিধা দেয়। অন্য জায়গায় তাঁদের নেতাদের ডাকলে বিরোধিতায় সরব হয়। ২১শে জুলাইয়ের প্রস্তুতি মঞ্চে এ বিষয়ও তুলে ধরবেন নেতারা। একইসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ১১ বছরের সরকার কী কী উন্নয়ন করেছে, তাও তুলে ধরবেন নেতারা। তৃণমূলের শীর্ষনেতারা বলছেন, “পাহাড়, জঙ্গলমহলে শান্তি ফিরিয়েছে তৃণমূল। উন্নয়ন চলছে। যাঁরা বিভ্রান্ত হয়ে বিজেপিকে ভোট দিয়েছিলেন, তাঁরা আবার তৃণমূলের প্রতি আস্থা রাখছেন।” বঙ্গ বিজেপিকে আক্রমণের পাশাপাশি নিশানায় থাকবে সিপিএমও। ১৯৯৩ সালে ২১শে জুলাই কী ঘটেছিল তা যেমন তুলে ধরা হবে ব্লক থেকে পঞ্চায়েত স্তরের প্রস্তুতি সভাগুলিতে। বাম আমলে যে সব ইস্যুকে হাতিয়ার করে পায়ের তলার মাটি শক্ত করেছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল, সে সবকিছুই জনগণের সামনে তুলে ধরবে তৃণমূল নেতৃত্ব।