নির্ঘন্ট সময়ের আগেই উত্তরবঙ্গে বর্ষা প্রবেশ করেছে। মেঘ কুয়াশায় কালো হয়ে রয়েছে পাহাড়ী আকাশ। ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণে নাজেহাল অবস্থা এলাকাবাসীর। গতকাল রাত থেকে টানা বৃষ্টি ধূপগুড়িতে। জলমগ্ন ধূপগুড়ির বিস্তীর্ণ এলাকা। বৃষ্টির জলে ভিজে পাহাড়ের ঢালগুলিও পিচ্ছিল হয়ে উঠেছে৷ প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে বিপদসঙ্কুল, দুর্গম সেই পথ পেরিয়েই বক্সা পাহাড়ের গায়ে থাকা বিভিন্ন গ্রামে স্বাস্থ্য পরিষেবা পৌঁছে দিচ্ছেন একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মীরা৷ প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে স্বাস্থ্য পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার এই প্রয়াসই সাধারণ মানুষের মন জয় করে নিয়েছে৷ দুর্গম পাহাড়ি পথ পেরিেয় স্বাস্থ্যকর্মীদের বক্সা পাহাড়ে বিভিন্ন গ্রামে পৌঁছে যাওয়ার সেই ভিডিও-ই এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল৷ আলিপুরদুয়ারের কালচিনি ব্লকের অন্তর্গত বক্সা পাহাড়ের বিভিন্ন ঢােল অবস্থিত তেরোটি গ্রামে স্বাস্থ্য পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্বে রয়েছে ফ্যামিলি প্ল্যানিং অ্যাসোসিয়েশন নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন৷
এমনিতেই পাহাড়ি এই পথ পেরিয়ে গ্রামগুলিতে পৌঁছনোর পথ যথেষ্ট দুর্গম৷ পাহাড়ি ঝোরা, নড়বড়ে সেতু, পাহাড়ের ঢাল বেয়ে পৌঁছতে হয় গ্রামগুলিতে৷ এত প্রতিকূলতাতেও হার মানেননি ওই স্বাস্থ্যকর্মীরা৷ ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, মোটা দড়ি ধরে প্রবল বেগে বয়ে চলা পাহাড়ি ঝোরা পেরোচ্ছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা৷ তাঁদের মধ্যে রয়েছেন এক মহিলাও৷ আবার কখনও দু’ পাশের পাথরের উপরে কয়েকটি বাঁশ পেতে হামাগুড়ি দিয়ে পাহাড়ি ঝোরা পেরিয়েছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা৷ একচুল এদিক ওদিক হলেই প্রবল বেগে ছুটে চলা ঝোরার জলের মধ্যে পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা৷ বক্সা পাহাড়ের প্রায় চূড়োয় অবস্থিত আদমা গ্রাম৷ এই সমস্ত গ্রামে পৌঁছতে পাকা রাস্তা দূরে থাক, নির্দিষ্ট কোনও পথ নেই৷ মানুষ চলাচল করে পাহাড়ের গায়ে প্রাকৃতিক ভাবে তৈরি হওয়া পথই ভরসা৷ পোলিওর টিকা ভর্তি বাক্স নিয়ে পাহাড়ের ঢালের পিচ্ছিল সেই পথই সন্তর্পণে পার করেছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা৷
