গোষ্ঠীকোন্দলে জর্জরিত পদ্মশিবির। ফের প্রকাশ্যে বঙ্গ বিজেপির অন্তর্কলহ। এবার বিস্ফোরক বীরভূমের প্রাক্তন জেলা সভাপতি দুধকুমার মণ্ডল। তাঁর অনুগামীদের চুপচাপ বসে যেতে নির্দেশ দিলেন বীরভূমের দাপুটে এই বিজেপি নেতা। অভিযোগ, তাঁর সঙ্গে আলোচনা না করেই ব্লক এবং জেলা কমিটি তৈরি হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই তাঁর এই ফেসবুক পোস্ট ঘিরে শুরু হয়েছে নতুন তরজা। দুধকুমার মণ্ডল ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, “জেলা থেকে ব্লক কমিটি আমার সঙ্গে আলোচনা না করে কমিটি গঠন করেছে। তাই ভারতীয় জনতা পার্টির সমর্থক এবং কার্যকর্তাগণ আমাকে যারা ভালোবাসেন তারা চুপচাপ বসে যান।” তাঁর অভিযোগ, ব্লক কমিটি গঠনের জন্য শনিবার ময়ূরেশ্বরে একটি বৈঠক ডাকা হয়েছিল। কিন্তু আমন্ত্রণ পাননি দুধকুমার। এক দলীয় সমর্থকের অনুরোধে বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন বিজেপির প্রাক্তন জেলা সভাপতি। সেই বৈঠকে কিছু প্রশ্ন তুলেছিলেন তিনি। দুধকুমারের অভিযোগ, যে পদ্ধতিতে বাংলায় বিজেপি চলছে তাতে দলের কর্মী এবং সাধারণ মানুষ হতাশ হচ্ছেন। এভাবে চললে এগোতে পারবে না দল। পাশাপাশি, আরএসএসের সক্রিয় প্রচারক দুধকুমারের কথায়, “অযোগ্য, দলের প্রতি দায়বদ্ধতা নেই এমন নেতাদের জেলা থেকে কমিটির প্রধান হিসেবে বসিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এবং তাঁরা পদ পেয়ে নানারকম নির্দেশ দিচ্ছেন। কিন্তু ওই নেতারা নিজেরা জনসাধারণের জন্য বা তৃণমূলের বিরুদ্ধে কোনও কর্মসূচিতে নামছেন না।”
উল্লেখ্য, এসমস্ত অভিযোগ ঘিরে দলীয় কার্যালয়ে আরেক প্রাক্তন জেলা সভাপতি শ্যামাপদ মণ্ডলের সঙ্গে বচসা হয় তাঁর। সেখান থেকে ফিরেই ফেসবুক পোস্টটি করেন দুধকুমার। দুধকুমার মণ্ডলের আমলেই বীরভূমে বিজেপির উত্থান। রমরমা হয়েছিল জেলাজুড়ে। জেলা সভাপতি ছিলেন তিনি। অথচ পুরভোটের সময় তাঁর সঙ্গে আলোচনা করেই কলকাতা থেকে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হয়েছিল। এর প্রতিবাদে সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন দুধকুমার। শুধু তাই নয়, এর আগে দলের প্রতি ক্ষোভপ্রকাশ করে রাজনৈতিক সন্ন্যাসও নিয়েছিলেন। সেইসময় লকেট চট্টোপাধ্যায়, জয় বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ রাজ্য নেতৃত্ব তাঁকে রাজনীতিতে ফিরতে অনুরোধ করেন। সক্রিয় রাজনীতিতে ফিরেও এসেছিলেন আরএসএসের প্রচারক। কিন্তু বর্তমানে দুধকুমারের অভিযোগ, তাঁর সঙ্গে আলোচনা না করেই ব্লক কমিটি তৈরি হচ্ছে। তাই নিজের অনুগামী ও ব্লক কমিটির সদস্যদের দলীয় কর্মসূচীতে অংশ নেওয়া থেকে বিরত থাকতে অনুরোধ করেছেন। যার জেরেই বিজেপির সংগঠন আরও নড়বড়ে হয়ে পড়েছে। প্রমাদ গুনছে পদ্ম-নেতৃত্ব।