বঙ্গ বিজেপির উপর ক্রমশই ভরসা খুইয়ে ফেলছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে শোচনীয় ভরাডুবির পর এই প্রথম বুথশক্তিকরণ কর্মসূচীতে শনিবার কলকাতায় এলেন রাজ্য বিজেপি সহ-পর্যবেক্ষক অরবিন্দ মেনন। বেশ কয়েকবছর ধরে রাজ্য বিজেপি নেতারা দিল্লীকে নিচুতলার পার্টি সংগঠন নিয়ে যা তথ্য দিয়েছে তার অধিকাংশই ভুয়া বলে প্রমাণিত হয়েছে। বস্তুত এই কারণে রাজ্য নেতাদের উপর আস্থা হারিয়েই এদিন মেননের হাত দিয়ে রাজ্য বিজেপি চালু করল নয়া অ্যাপ। বুথে বুথে বিজেপির সামাজিক বিন্যাস, বুথ সভাপতির নাম-ফোন নম্বর ও কর্মসূচি গ্রহণের যাবতীয় তথ্য আপলোড করতে হবে এই অ্যাপে। বুথ সংগঠন কতটা ঠিকঠাক রয়েছে তার তথ্য এই অ্যাপের মাধ্যমেই জেনে নেবে দিল্লী। হেস্টিংস কার্যালয়ে এদিন নয়া অ্যাপ নিয়ে জেলা নেতাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। মেনন ছাড়াও ছিলেন সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, সংগঠন সম্পাদক অমিতাভ চক্রবর্তী। মেননের এই প্রশিক্ষণ শিবির নিয়ে মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের কটাক্ষ, “কে অরবিন্দ মেনন? খায় না মাথায় দেয়? কত বিজেপি নেতা এলেন-গেলেন, আর উনি কী করবেন।”
প্রসঙ্গত, হুগলী সাংগঠনিক জেলার কার্যকারিণী বৈঠক চলাকালীন জেলার সভাপতি তুষার মজুমদার, পুরশুড়ার বিধায়ক বিমান ঘোষ, রাজ্য সম্পাদক দীপাঞ্জন গুহদের সামনে মণ্ডল সভাপতিদের একাংশের ভূমিকায় ক্ষোভ উগরে দেন জেলার নেতারা। হুগলী জেলা কার্যকারিণী বৈঠকে সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় অনুপস্থিত ছিলেন। জেলা নেতাদের দাবি, ভোট প্রচারে ত্রিপুরা গিয়েছেন। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, লকেট যদি ভোট প্রচারেই যাবেন তাহলে বৈঠক অন্যদিন হল না কেন?।বলাগড় মণ্ডলের প্রাক্তন সভাপতি অলোক কুণ্ডুর অভিযোগ, “যাঁরা দলের দায়িত্বে রয়েছেন তাঁদের অনেকেই সামান্য কিছুর বিনিময়ে বিক্রি হয়ে যান।” জেলা কার্যকরী কমিটির সদস্য নিমাই দত্ত সাংগঠনিক সমস্যা নিয়ে জেলা সভাপতি, সাংসদ ও বিধায়ককে জানানো হলেও আজও কোনও সমাধান হয়নি। প্রশ্ন উঠছে, বঙ্গ বিজেপির অন্তর্দ্বন্দ্ব সামাল না দিতে পারলে দিল্লীর নজরদারি কতটা কাজে লাগবে? আদৌ কি মিলবে সুরাহাসূত্র? আপাতত সেদিকেই তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল।