নির্ঘন্ট সময়ের আগেই বর্ষা প্রবেশ করেছে উত্তরবঙ্গে। দার্জিলিং কালিম্পং জলপাইগুড়িসহ বিভিন্ন জেলায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। এই অতিবর্ষণে বেহাল উত্তরবঙ্গ। বিপদসংকেতের উপর দিয়ে বইছে তিস্তা নদীর জল। জারি হয়েছে হলুদ সতর্কতা। এবার নড়েচড়ে বসল প্রশাসন। নদী বাঁধের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে রাতেই গ্রাউন্ড জিরোতে পৌঁছে গেলেন খোদ পুলিশ সুপার ও পৌর প্রশাসনের কর্তারা। নদী বাঁধের পরিস্থিতি ঠিক কেমন এবং বন্যা এলে কোন এলাকার কোন ফ্লাড শেল্টারে আশ্রয় নেবেন বানভাসিরা তা ভাল করে ঘুরে দেখেন জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার দেবর্ষি দত্ত। তাঁর সঙ্গে ছিলেন জলপাইগুড়ি পৌরসভার ভাইস চেয়ারম্যান সৈকত চ্যাটার্জী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সহ অন্যান্য পুলিশ আধিকারিকরা। ভাল করে ঘুরে দেখে এলাকাবাসীদের আশ্বস্ত করেন তাঁরা।
পুলিশ সুপার দেবর্ষি দত্ত বলেন, ‘আমরা পৌরসভার সঙ্গে তিস্তার সুকান্ত নগর কলোনি-সহ বিভিন্ন অসংরক্ষিত এলাকা পরিদর্শন করলাম। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভাব অভিযোগ শুনলাম। তিস্তা বাঁধের কোন কোন জায়গায় ক্ষতি হয়েছে তা দেখলাম। আপাতত পরিস্থিতি ঠিক আছে। জল বাড়লে সমস্যা হতে পারে। তবে চিন্তার কারণ নেই, আমরা সতর্ক রয়েছি। এলাকাবাসীদের সতর্ক থাকতে বললাম। তিস্তা নদীর এইসব এলাকাগুলির পরিস্থিতি আমরা সেচ দফতরকে জানাব।’ ভাইস চেয়ারম্যান সৈকত চ্যাটার্জী বলেন, ‘আমরা গত বছর বন্যার কথা মাথায় রেখে আগেভাগে এলাকা দেখে গেলাম। কারন এই সুকান্ত নগর এলাকার সাথে আমাদের পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ডের বেশ কিছু এলাকা বানভাসি হয়।
জল বাড়লে যাতে ফ্লাড শেল্টারে পৌঁছাতে স্থানীয় মানুষদের কোনও অসুবিধায় পড়তে না হয় তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা নিতে সেচ দফতরকে জানাব।’ গত কয়েকদিন ধরে বৃষ্টি শুরু হয়েছে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায়। মেঘলা আকাশ ও বৃষ্টির জেরে সূর্যের মুখ দেখেনি জলপাইগুড়ির বাসিন্দারা।
লাগাতার বর্ষণে ইতিমধ্যেই ভেসে গেছে আলিপুরদুয়ার। গত ২৪ ঘণ্টায় আলিপুরদুয়ারে ২০৬ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর। হাসিমারায় বৃষ্টি হয়েছে ২০৯ মিলিমিটার। জলমগ্ন হয়ে পড়েছে আলিপুরদুয়ার শহর। শহরের ২০টি ওয়ার্ডের কোথাও হাঁটু জল তো কোথাও কোমর জল দাঁড়িয়ে গেছে। স্লুইসগেট লিক করে আট নম্বর ওয়ার্ডে উল্টোদিকে শহরে ঢুকছে নদীর জল। ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পুরসভার কাউন্সিলর শান্তনু দেবনাথ। অন্যদিকে ভুটানেও অবিরাম বৃষ্টির জেরে জলঢাকা নদীর অসংরক্ষিত এলাকাতেও হলুদ সতর্কতা জারি করা হয়েছে সেচ দফতরের তরফে।