যোগ্যতা অর্জন আগেই করে ফেলেছিল ভারত। এশিয়ান কাপের কোয়ালিফায়ার পর্বে প্যালেস্তাইন ৪-০ ব্যবধানে হারিয়ে দেয় ফিলিপিন্সকে। ফলে এশিয়ান কাপে ভারতের অংশগ্রহণ নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল। মঙ্গলবার নিয়মরক্ষার ম্যাচে হংকংয়ে ৪-০ হারিয়ে গ্রুপ শীর্ষে থেকেই এশিয়ান কাপে চলে গেল ভারত। গ্রুপে সবার উপরে থাকায় মূল পর্বের ড্র হওয়ার সময় কিছুটা সুবিধা পাবেন সুনীলরা। হৃৎযন্ত্রে সমস্যা থাকার কারণে বছর তিনেক আগে ফুটবলজীবনই শেষ হয়ে যেতে বসেছিল আনোয়ার আলির। তাঁকে ফুটবল না খেলার নির্দেশ দিয়েছিল সর্বভারতীয় ফুটবল সংস্থা। সেই সময় আনোয়ারের পাশে দাঁড়ান প্রাক্তন ফুটবল কর্তা রঞ্জিত বজাজ, যিনি বিতর্কিত মন্তব্যের কারণে বিখ্যাত। চিকিৎসায় জানা গিয়েছিল, ফুটবল খেলতে আনোয়ারের কোনও সমস্যা নেই। কোর্টকাছারি করে তাঁকে ফুটবল মাঠে ফেরান রঞ্জিতই। সেই লড়াই অবশেষে সফল। প্রথমে আইএসএলে এফসি গোয়ার হয়ে ভাল খেলে নজর কাড়েন আনোয়ার। এ বার জাতীয় দলের হয়েও জাত চিনিয়ে দিলেন তিনি। “আমার যোদ্ধা। আজ স্বপ্ন সত্যি হল। যাঁরা এই ছেলেটার হয়ে মুখ খুলেছিলেন, তাঁদের সবাইকে ধন্যবাদ। আজ ও পাল্টা উপহার ফিরিয়ে দিল”, গোলের পরেই টুইট করেন রঞ্জিত। ম্যাচের দুই মিনিটে ছোট কর্নার নিয়েছিলেন রোশন নাওরেম। বল উড়ে আসে বক্সে। ভারতের কেউ হেড করতে পারেননি। জটলার মধ্যে থেকে হংকংয়ের ডিফেন্ডাররাও বল ক্লিয়ার করতে পারেননি। বল এসে পড়ে আনোয়ারের পায়ে। ফাঁকায় একটু জায়গা পেয়ে আচমকাই শট নেন আনোয়ার। বল জালে জড়াতেই উদ্বেল হয়ে ওঠে যুবভারতী। মাঠে উপস্থিত প্রায় পঞ্চাশ হাজার দর্শক শুরুতেই উচ্ছ্বাস করার সুযোগ পেয়ে যান।
এরপর ভারত ক্রমাগত আক্রমণ শানিয়ে যায়। তবে হংকংয়ের গতিতে কিছুটা বিপদেও পড়েছিল তারা। ভারতের কোনও ফুটবলারের পায়ে বল থাকলেই তাঁকে ছেঁকে ধরছিলেন সমর্থকরা। ফলে নিজেদের মধ্যে পাস বিনিময় করতে সমস্যা হচ্ছিল। এ অবস্থায় ভারতও পাল্টা আক্রমণে রাস্তা নেয়। খেলাটাকে ছড়িয়ে দিতে চাইছিলেন খেলোয়াড়রা। তাতেই ফল মেলে। এক বার সাহাল সামাদের বাঁ পায়ের জোরালো শট বারে লেগে ফেরে। প্রথমার্ধ শেষের একটু আগে গোল করেন সুনীল ছেত্রী। মাঝ মাঠ থেকে ভাসানো বল ডান পায়ে রিসিভ করেন। বাঁ পায়ের ছোট টোকায় গোলকিপারকে টপকে বল জালে জড়ান। প্রথমার্ধ থেকেই শুরু হয়েছিল বৃষ্টি। দ্বিতীয়ার্ধেও তা থামল না। মাঠ একটু পিচ্ছিল থাকায় বল পাসিংয়ে কিছুটা সুবিধা হয়ে যায় ভারতের। সেই সুযোগই নেয় তারা। দক্ষতাতেও হংকংয়ের ফুটবলারদের টেক্কা দেন সুনীলরা। আগের ম্যাচের মতো এ দিনও সুনীল উঠে যাওয়ার পরে গোল পায় ভারত। ডান দিক থেকে ব্রেন্ডন ফার্নান্দেস পাস দিয়েছিলেন বক্সে। চলতি বলে শট নিয়ে জালে জড়ান মনবীর সিংহ। এরপ, দিনের সেরা গোলটা বোধহয় করে গেলেন ঈশান পন্ডিতা। খেলার তখন শেষ কয়েক সেকেন্ড চলছে। ডান দিক থেকে পাস বাড়িয়েছিলেন মনবীর। হংকংয়ের দুই ডিফেন্ডারকে বুদ্ধিতে বোকা বানিয়ে ব্যাক ফ্লিকে বল জালে জড়ালেন পন্ডিতা। স্বাভাবিকভাবেই এই জয় এশিয়ানে কাপে বাড়তি আত্মবিশ্বাস জোগাবে ভারতকে।
Read: নেতৃত্বহীনতার কারণেই কি বিধানসভায় ছন্নছাড়া বিজেপি? – প্রশ্ন তুলছেন পদ্ম শিবিরের বিধায়করাই
Tweet: নেতৃত্বহীনতার কারণেই কি বিধানসভায় ছন্নছাড়া বিজেপি? – প্রশ্ন তুলছেন পদ্ম শিবিরের বিধায়করাই
Football