বেশিদিন আগের কথা নয়। চলতি বছরের ৪ জানুয়ারি ত্রিপুরায় এসে রাজ্যের উন্নয়ন ও তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবের কাজের ওপরে তাঁর চূড়ান্ত ভরসার কথা জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। তাঁর কথায় উঠে এসেছিল এইচআইআরএ-র সাফল্যের কথা। আর ১৪ মে সেই বিপ্লব দেবের ওপরেই দলের যে আস্থা নেই সেটা তাঁর পদত্যাগের মাধ্যমেই পরিষ্কার বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। কিন্তু কেন সরে গেল বা সরানো হল বিপ্লব দেবকে? এই গোটা বিষয়টিকেই প্রচারে ইস্যু করছে তৃণমূল। ব্যর্থতা ঢাকতেই মুখ্যমন্ত্রী বদল হয়েছে বলে প্রচারে তুলে এনেছে তৃণমূল কংগ্রেস। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, নৌকায় ফুটো হয়েছে। চালক বদলে কি হবে? বিপ্লব দেবের জায়গায় বলির পাঁঠা হয়েছেন ডাঃ মাণিক সাহা। দু’জন চিকিৎসক প্রার্থী হয়েছেন৷ তাও চিকিৎসা ব্যবস্থার এই দুরবস্থা কেন? ৫০% লোক নিয়ে চলছে হাসপাতাল। নতুন আর পুরনো দুই মাণিকবাবু জবাব দিতে পারবেন না। নতুন বোতলে পুরনো মদ। এটাই বিজেপির ডাবল ইঞ্জিন সরকার।
রাজনৈতিক মহলের মতে, প্রশাসনের শীর্ষ স্তরে থেকে বিপ্লব দেবকে রেখে ২০২৩-এর ভোটে লড়াই করতে গেলে সুবিধা হবে না। দেওয়াল লিখন কার্যত স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল বিজেপির কাছে। তাই সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের পাঠিয়ে তাদের উপস্থিতিতেই কার্যত পদত্যাগে বাধ্য করানো হল বিপ্লব দেব-কে। এ ছাড়া একাধিক বিষয় আছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। ত্রিপুরায় বিজেপি জেতার পরেই লেনিন মূর্তি ভাঙা নিয়ে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়। গত বছর আগরতলায় বামেদের অফিস ও পত্রিকার অফিস ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা নিয়ে দেশ জুড়ে বিরোধীদের সমালোচনার মুখে পড়তে হয় বিজেপিকে। যা আসলে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছিল। সাম্প্রতিক সময়ে পুরভোটে অশান্তি। রাজ্যের একাধিক জায়গায় বিক্ষিপ্ত গন্ডগোল। বিরোধী নেতারা আক্রান্ত। রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান হিসাবে ব্যর্থতার দায় সেই বিপ্লব দেবের ওপরেই পড়েছে। আগামী নির্বাচনে আইন শৃঙ্খলা অন্যতম ইস্যু হতে চলেছে রাজ্যে। নয়া মুখ্যমন্ত্রী মাণিক সাহার কথাতেও উঠে এসেছে আইন-শৃঙ্খলা জনিত ইস্যুর কথা। বিজেপির অর্ন্তদ্বন্দ্ব। এই পরিস্থিতি নিয়ে সরব হয়ে ত্রিপুরায় আরও প্রাসঙ্গিক হয়ে ওঠার চেষ্টা শুরু করে দিল তৃণমূল।