চিকিৎসা বিজ্ঞানের যে হারে অগ্রগতি হয়েছে, তাতে বহু কঠিন সেরে যাচ্ছে। সাধারণ মানুষ ফিরে পাচ্ছে জীবন। তেমনই সামনে এল এক ঘটনা। অভিনব পদ্ধতিতে শিরদাঁড়া-হাঁটুর ব্যথা সারিয়ে প্রাক্তন সেনা আধিকারিককে সুস্থ করল এসএসকেএম। পিঠে যন্ত্রণা, হাঁটুতে ব্যথা, তা থেকেই সুঠাম শরীরটা কুঁকড়ে-দুমড়ে একশা অবস্থা। খর্বকায় কুঁজো থেকে সেই শরীরটাকেই সোজা, সুঠাম করল এসএসকেএমের ফিজিক্যাল মেডিসিন বিভাগ। অশীতিপর কর্নেল দুর্গাশংকর বন্দ্যোপাধ্যায়কে যৌবন ফিরিয়ে দিল সরকারি হাসপাতাল। সেনাবাহিনীর বীর-সাহসী কর্নেল দীর্ঘদিন ধরেই হাঁটতে পারতেন না। যন্ত্রণায় জর্জরিত, মুখ বেঁকে গিয়েছিল। দক্ষিণ কলকাতার বাসিন্দা কর্নেল দুর্গাশংকর বন্দ্যোপাধ্যায় এসএসকেএমের ফিজিক্যাল মেডিসিন বিভাগে আসেন। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা যায়, শিরদাঁড়ার ফ্যাসেট জয়েন্টে ব্যথা। কী এই ফ্যাসেট জয়েন্ট? চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, মেরুদণ্ডের পিছনের কশেরুকার মধ্যে ছোট ছোট যে সংযোগ তাকেই বলা হয় ফ্যাশেট জয়েন্ট। এই জয়েন্টগুলো কার্টিলেজের বিপরীত দিকে থাকে। সোজা হয়ে হাঁটতে গেলেই জয়েন্টে হয় অসহ্য যন্ত্রণা। ব্যথা কমানোর জন্য কুঁজো হয়ে হাঁটতেন কর্নেল।
কিন্তু তাতে আরেক বিপদ। ওভাবে হাঁটার ফলে ডিস্ক থেকে যে নার্ভটা বের হয়ে যেত তাতে চাপ পড়ত, শুরু হয়ে যেত হাঁটুর যন্ত্রণা। স্রেফ হাঁটাচলা বা বসার কাজ নয়, ঝুঁকে পড়া শরীর নিয়ে শৌচকর্ম করতেও বেদম সমস্যা হত। ডা. রাজেশ প্রামাণিক জানিয়েছেন, কর্নেলের ডিস্কের সমস্যা তো ছিলই। পরীক্ষা করে দেখা যায়, ডিস্কটা স্পাইনাল নার্ভটাকে কমপ্রেস করেছিল বা চেপে দিয়েছিল। হাঁটুতেও আর্থ্রাইটিস ছিল অশীতিপর কর্নেলের। দক্ষিণ কলকাতার রানিকুঠি এলাকার বাসিন্দা তাই কুঁজো হয়ে হাঁটতেন। এল ফোর এল ফাইভের সেই সমস্যা সমাধানে অঙ্ক কষেন ডা. রাজেশ প্রামাণিক। তিনটে ধাপে চিকিৎসা হয় এসএসকেএমে। প্রথম ধাপে, ফ্যাসেট জয়েন্টের নার্ভের তিনটে শাখায় রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি অ্যাবলেসন করা হয়। চিকিৎসা পরিভাষায় যা আরএফএ। শিরদাঁড়ার ওই অংশের স্নায়ুগুলোকে নিষ্ক্রিয় করে দেওয়ায় বন্ধ হয়েছে ফ্যাসেট জয়েন্টের ব্যথা। ডিস্কের যে নার্ভরুটটা চেপে গিয়েছিল, সেখানে নার্ভরুট ব্লক করে দেওয়া হয়েছে। সমস্যা শুরু হয় হাঁটুর মারাত্মক যন্ত্রণা কমাতে গিয়ে। দেখা যায়, হাঁটু বদলানো ছাড়া উপায় নেই। কর্নেলের যা বয়স সেই বয়সে হাঁটু বদলানো সমস্যাজনক। ডা. রাজেশ প্রামাণিকের কথায়, “সবদিক বিবেচনা করে আমরা বাঁ হাঁটু বা নি জয়েন্টের ভিতরে জেল ইনজেক্ট করি। পেন সেনসেশন বা ব্যথার অনুভূতি তৈরি করছিল জেনিকুলার নার্ভ। সেখানে কুলড আরএফএ করা হয়েছে। মাইনাস ৬০ ডিগ্রি তাপমাত্রা তৈরি করে অ্যাবলেক্ট করে দেওয়া হয়েছে নার্ভটা। আপাতত সুস্থ তিনি। বিপদমুক্ত।
Read: এবার ফের বলিউডে মাদক যোগ – বেঙ্গালুরুর পার্টি থেকে গ্রেফতার শক্তি-পুত্র সিদ্ধান্ত কাপুর
Twitter: এবার ফের বলিউডে মাদক যোগ – বেঙ্গালুরুর পার্টি থেকে গ্রেফতার শক্তি-পুত্র সিদ্ধান্ত কাপুর
sskm