অব্যাহত মোদী সরকারের দুয়োরানিসুলভ আচরণ। ফের কেন্দ্রীয় বঞ্চনার শিকার বাংলা। প্রসঙ্গত, বিগত কয়েক বছর যাবৎ ১০০ দিনের কাজে দেশের মধ্যে শীর্ষে রয়েছে বাংলা। কেন্দ্রের বিজেপিশাসিত সরকারের ওয়েবসাইট অনুযায়ী, চলতি অর্থ বছরে এপ্রিলে প্রথম সপ্তাহে বাংলার জন্য ১০০ দিনের কাজে ২৪ কোটি ৪২ লক্ষ হাজার শ্রমদিবস বরাদ্দ করেছিল মোদী সরকার। কিন্তু হঠাৎ করেই ১১ই জুন বাংলার জন্য বরাদ্দ শ্রমদিবসের সংখ্যা শূন্যে নামিয়ে আনা হল। কারণ কী? ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে বিতর্কের ঝড়।
উল্লেখ্য, এহেন ঘটনায় ১০০ দিনের কাজে নিযুক্ত কর্মী-আধিকারিকরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। পাশাপাশি তাঁরা জানাচ্ছেন, এমন ঘটনা নজিরবিহীন। এর আগে এমন কখনও ঘটেনি। প্রতিবারেই রাজ্যের বরাদ্দ বৃদ্ধি করতে কেন্দ্র বাধ্য হয়েছে। বিগত অর্থ বছরে রাজ্যের জন্য ২৭ কোটি শ্রমদিবস বরাদ্দ করা হয়েছিল। যদিও পরে তা বৃদ্ধি পেয়ে ৩৬ কোটি ৪১ লক্ষ ১৮ হাজারে পৌঁছেছিল। সেক্ষেত্রেও বঞ্চনার শিকার হতে হয়েছিল বাংলাকে, শ্রমদিবস বাড়লেও টাকা এসে পৌঁছয়নি। বিগত বছরের ২৬ ডিসেম্বরের পর থেকে ১০০ দিনের কাজ প্রকাল্পের খাতে রাজ্যের জন্য কোন অর্থ বরাদ্দ করেনি কেন্দ্র। এই নিয়ে সরব হয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রধানমন্ত্রীকে একাধিকবার চিঠিও লিখেছেন মুখ্যমন্ত্রী। জোরালোভাবে আন্দোলনেও নেমেছে তৃণমূল। ১০০ দিনের কাজে গত অর্থ বছরে মোদী সরকারের কাছে বাংলার পাওনা অর্থের পরিমাণ প্রায় ৬,৫০০ কোটি টাকা। যার এক টাকাও দেয়নি মোদী সরকার। যা ঘিরেই উঠছে প্রশ্ন।
এমন পরিস্থিতিতে ১০০ দিনের কাজে নিযুক্ত রাজ্যবাসীদের বিকল্প কর্মসংস্থান প্রদান করার জন্য বিভিন্ন মন্ত্রককে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চলতি অর্থ বছরে রাজ্যে ১০০ দিনের কাজের আওতায় ইতিমধ্যেই ২ কোটি ১৫ লক্ষ ৭ হাজার শ্রমদিবস তৈরি হয়েছে। ফলে মোদী সরকারের কাছে রাজ্যের পাওনা অর্থের পরিমাণ ১,৫০০ কোটি টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। সব মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত রাজ্যে পাওনা অর্থের পরিমাণ মোট আট হাজার কোটি টাকা। কিন্তু বরাদ্দ করার আড়াই মাস পরে হঠাৎ করেই রাজ্যের বরাদ্দ শ্রমদিবসের পরিমাণ শূন্য নামিয়ে আনা হল। প্রসঙ্গত, ১০০ দিন কাজ এবং ১৫ দিনের মধ্যে মজুরি পাওয়া জব কার্ড হোল্ডারদের সাংবিধানিক অধিকার। তার চেয়েও তাৎপর্যপূর্ণভাবে, এই বঞ্চনার শিকার কেবল বাংলাই। বিজেপিশাসিত ডবল ইঞ্জিন রাজ্যগুলিতে চলতি আর্থিক বছরের জন্য শ্রমদিবস বরাদ্দ করা হয়েছে। যোগীর উত্তরপ্রদেশে পেয়েছে ২৬ কোটি শ্রমদিবস, মধ্যপ্রদেশে ২০ কোটি, অন্ধ্রপ্রদেশে ১৪ কোটি, বিহারে ১৫ কোটি করে পেয়েছে। আদৌ বাংলা বরাদ্দ পাবে কি না, তা নিয়ে ঘনিয়েছে ঘোর সংশয়।