বাংলার মালদহ জেলার ইতিহাসের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িয়ে আছে রসকদম্ব। কী এই রসকদম্ব? সে জেলার এক সাবেকি মিষ্টান্ন। এবার মালদহের সেই সুলতানি আমলের রসকদম্বের জিআই তকমার দাবি জানাল মালদহ ম্যাঙ্গো মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশন। রসগোল্লায় বাংলা পেটেন্ট পাওয়ার পর থেকেই মালদহের রসকদম্বের জিআই তকমার দাবি উঠেছিল। কেন্দ্রীয় শিল্প এবং বাণিজ্যমন্ত্রকের পেটেন্ট, ডিজাইন অ্যান্ড ট্রেড মার্কসের কন্ট্রোলার জেনারেলের কাছে অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষে এ বিষয়ে আবেদন জানানো হয়েছে। ইতিমধ্যেই ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট কাউন্সিল অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি দফতরকে এনিয়ে চিঠি পাঠিয়েছে অ্যাসোসিয়েশন।
পাশাপাশি ম্যাঙ্গো মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের দাবি, এই রস কদম্ব প্রথম মালদায় তৈরি হয়েছিল প্রায় ৫০০ বছর আগে। উল্লেখ্য, সুলতান হোসেন শাহের আমলে বাংলার রাজধানী গৌড়ে গিয়েছিলেন মহাপ্রভু চৈতন্যদেব। তিনি গৌড়ের কেলি কদম্ব গাছের ছায়াতে দীক্ষা দিতেন শিষ্যদের। সেই কদম্ব গাছের থেকেই রস কদম্ব মিষ্টির সূচনা হয় বলে শোনা যায়। এছাড়াও সুলতানি আমলে টাঁড়ার খাজা, মনোহারা, মনাক্কা ইত্যাদি মিষ্টি ছিল। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সে সমস্ত মিষ্টি হারিয়ে গিয়েছে। রসকদম্ব মিষ্টি রয়ে গিয়েছে এখনও। জামাইষষ্ঠীতে শাশুড়ির হাতে রস কদম্ব মিষ্টি তুলে দেওয়া এক আবহমান রীতির অঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া, বিভিন্ন ধর্মীয় এবং সামাজিক অনুষ্ঠানে এই মিষ্টির প্রচুর চাহিদা রয়েছে। মালদহের হিমসাগর, ফজলি, লক্ষণভোগ আম ইতিমধ্যেই পেটেন্ট পেয়েছে। এবার রসকদম্বের পেটেন্ট পেতেও শুরু তৎপরতা। “মালদহ মানেই যেমন আম তেমনি মালদহের মিষ্টি মানেই হল রসকদম্ব। সেই মিষ্টির পেটেন্ট পাওয়ার জন্যই আমরা আবেদন জানিয়েছি”, জানিয়েছেন মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি উজ্জল সাহা।