তিন বছর আগে অশ্বিন এবং বাটলারের লড়াই দেখেছে গোটা ক্রিকেটবিশ্ব। তখনও রাজস্থানের হয়ে খেলতেন বাটলার। অশ্বিন খেলতেন কিংস ইলেভেন পঞ্জাব দলে। রাজস্থান-পঞ্জাব ম্যাচে বল করার সময় অশ্বিন দেখেন, রান নেওয়ায় তাড়নায় ক্রিজ ছেড়ে এগিয়ে গিয়েছেন নন স্ট্রাইকার বাটলার। সঙ্গে সঙ্গে ডেলিভারি না-করে নন স্ট্রাইকার প্রান্তের উইকেট ভেঙে দেন অশ্বিন। আউট হয়ে যান বাটলার। ম্যাচ হেরে যায় রাজস্থান। বাটলারকে ওই ভাবে আউট করা ‘অক্রিকেটীয়’ কি না, তা নিয়ে তখন ব্যাপক বিতর্ক হয়েছিল। ক্রিকেটপ্রেমীদের একাংশের কড়া সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন ভারতীয় দলের অফস্পিনার। যদিও তিনি তাঁর যুক্তিতে অনড় ছিলেন। ক্রিকেটের পরিভাষায় ওই পদ্ধতিতে আউট করাকে বলা হয়ে ‘মাঁকড়ীয়’ আউট। অশ্বিনের যুক্তি ছিল, তিনি ক্রিকেটের আইনের পরিধির মধ্যে থেকেই বাটলারকে আউট করেছেন।
সে যাইহোক, কেটে গিয়েছে মাঝে অনেকগুলো দিন। আবারও শিরোনামে উঠছ এল ওঁরা দু’জন। নিজের জার্সিতে রবিচন্দ্রন অশ্বিনের সই নিলেন জস বাটলার। রাজস্থান রয়্যালসের টুইটার হ্যান্ডলে দেখা গেল সেই ভিডিয়ো। ভিডিয়োয় দেখা যাচ্ছে, বাটলার নিজের দু’টি জার্সি বাড়িয়ে দিলেন অশ্বিনের দিকে। সেখানে সই দিলেন ভারতীয় স্পিনার। আইপিএলের শেষে দেশে ফিরে যাওয়ার আগে দলীয় সতীর্থদের সই সংগ্রহ করে নিয়ে যাচ্ছেন বাটলার। অন্য সতীর্থদের সঙ্গে সই নিলেন অশ্বিনেরও। টুইটারে সেই ভিডিয়ো পোস্ট করে রাজস্থান লিখেছে, ‘দু-জনে’। ঘটনাচক্রে, এ বারের আইপিএলে অশ্বিন এবং বাটলার একই দলের সদস্য। তাঁদের দল রাজস্থানকে আইপিএলের ফাইনালেও তুলেছেন তাঁরা। যেখানে বাটলারের অবদান অবিস্মরণীয়। গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচ ব্যাট-হাতে বার করেছিলেন বোলার অশ্বিন।
ফাইনালে অবশ্য বাটলার খুব বড় রান করতে পারেননি। কার্যত ব্যর্থ অশ্বিনও। তবে টুর্নামেন্ট শেষের হিসেব বলছে, ১৭টি ম্যাচ খেলে ৮৬৩ রান করেছেন বাটলার। কমলা টুপি পেয়েছএন সর্বাধিক রানকারী হিসেবে। পাশাপাশিই পেয়েছেন আরও পাঁচটি পুরস্কার। সব থেকে বেশি ছক্কা, সব থেকে বেশি চার, প্রতিযোগিতার সেরা, সেরা ‘পাওয়ার প্লেয়ার’, ‘ভ্যালুয়েবল প্লেয়ার’-এর মতো নানা পুরস্কার দখল করেছেন এই ইংরেজ। আবার অশ্বিন ব্যাট হাতে করেছেন ১৯১ রান। নিয়েছেন ১২টি উইকেট। অলরাউন্ডার হিসাবে রাজস্থানকে বেশ কয়েকটি ম্যাচ জিতিয়েছেন তিনি। তবে ফাইনালে গুজরাতের বিরুদ্ধে তিন ওভারে ৩২ রান দিয়েছিলেন তিনি। কাঁধে-কাঁধ লাগিয়ে লড়েছেন একদা ‘মাঁকড়ীয়’ আউটের দুই চরিত্র। একদা শত্রুপক্ষের সঙ্গে একযোগে লড়াইয়ের সেই স্মৃতিই সঙ্গে করে নিয়ে গেলেন বাটলার।