বিজেপি তথা কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সমালোচনা তো বটেই, মঙ্গলবার পুরুলিয়ায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কর্মী সম্মেলন যেন ছিল আক্ষরিক অর্থেই ‘কর্মী সম্মেলন’।
গত লোকসভা, বিধানসভায় পুরুলিয়া সে অর্থে ভাল ফল করতে পারেনি তৃণমূল। পরিসংখ্যানের বিচারে, তারা দ্বিতীয় স্থানে। কিন্তু এলাকায় বিজেপিকে হারাতে যে একেবারে নীচু স্তরের সংগঠনকেই মজবুত করতে হবে, তা ভালভাবে বোঝেন পোড়খাওয়া রাজনীতিবিদ। এদিনের নেত্রীর ভাষণের সিংহ ভাগই তাই জুড়ে ছিলেন কর্মীরাই। হারকে ভুলে দলীয় কর্মীদের মনোবল বাড়াতে নেত্রী বললেন, ‘আমি আপনাদের পাহারাদার। হেরে গিয়েছেন তো কী, ঘর থেকে বের হন’।
পুরুলিয়াতে পায়ের তলার মাটি শক্ত করেছে বিজেপি। আর সেই মাটি টলাতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ ঘাস ফুল শিবির। তাই সেখানে জনসংযোগ বাড়ানোর ওপরই নজর দিচ্ছেন নেত্রী। দলীয় কর্মীদের উদ্বুব্ধ করতে দিলেন বিশেষ পাঠও।
মঞ্চ থেকে নেত্রী তাঁর কর্মীদের চাঙ্গা করতে বললেন, ‘তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মীরা আমাদের দলের সম্পদ। আমি ওঁদের সঙ্গে ভাই বোনের মতো ব্যবহার করি। মঞ্চে নেতা ক’জন বসে আছে গুনুন। বড় জোর ২০ জন হবে। আর নীচে রয়েছেন কয়েক লক্ষ লোক। বড় নেতারা নয়, বড় হচ্ছে আপনারা। আপনারা যাঁরা নীচে থাকেন, আপনারাই সব করেন। আপনারাই সবচেয়ে বড় নেতা’।
চব্বিশের নির্বাচনের আগে কর্মীদের ফের সর্বশক্তি দিয়ে রণাঙ্গনে নামাতে তৎপর নেত্রী। বললেন, ‘আমি চাই তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীরা ঘর থেকে বের হন। হেরে গেছেন তো কী আছে, মিউনিসিপ্যালিটিতে তো মানুষ আপনাদের জিতিয়েছে। ঘর থেকে বের হন’। নেত্রীর সংযোজন, ‘কোন আদিবাসী মানুষ পাট্টা পাচ্ছে না দেখুন, সাইকেল করে গ্রামে গ্রামে যান। গ্রামে গিয়ে বসুন। মানুষের দরজায় গিয়ে খবর নিন। মানুষের কী চায়? আমি চাই আপনারা মানুষের সঙ্গে থাকি। আর আগামী দিন এখান থেকে একটা সিট যেন বিজেপি, সিপিএম, কংগ্রেস না পায়, সেটা আপনাদের লক্ষ্য রাখতে হবে’।